পুনশ্চ

        চললেন বনঝাউ ভেঙে

    গাঙশালিকের কোলাহলের মধ্য দিয়ে।

           শিষ্য শুধালো, ‘কোথায় যাও প্রভু,

                 ও দিকে তো নেই ভদ্রপাড়া। '

    গুরু বললেন, ‘চলেছি স্নানসমাপনের পথে। '

 

 

বালুচরের প্রান্তে গ্রাম।

        গলির মধ্যে প্রবেশ করলেন গুরু।

    সেখানে তেঁতুল গাছের ঘন ছায়া,

শাখায় শাখায় বানরদলের লাফালাফি।

        গলি পৌঁছয় ভাজন মুচির ঘরে।

পশুর চামড়ার গন্ধ আসছে দূর থেকে।

        আকাশে চিল উড়ছে পাক দিয়ে,

রোগা কুকুর হাড় চিবোচ্ছে পথের পাশে।

        শিষ্য বললে, ‘রাম! রাম!'

           ভ্রূকুটি করে দাঁড়িয়ে রইল গ্রামের বাইরে।

 

 

ভাজন লুটিয়ে পড়ে গুরুকে প্রণাম করলে

                          সাবধানে।

    গুরু তাকে বুকে নিলেন তুলে।

           ভাজন ব্যস্ত হয়ে উঠল,

        ‘কী করলেন প্রভু,

অধমের ঘরে মলিনের গ্লানি লাগল পুণ্যদেহে। '

        রামানন্দ বললেন,

‘স্নানে গেলেম তোমার পাড়া দূরে রেখে,

    তাই যিনি সবাইকে দেন ধৌত করে

        তাঁর সঙ্গে মনের মিল হল না।

এতক্ষণে তোমার দেহে আমার দেহে

        বইল সেই বিশ্বপাবনধারা।

ভগবান সূর্যকে আজ প্রণাম করতে গিয়ে প্রণাম বেধে গেল।