আকাশপ্রদীপ

                            মোহাবেশে ঘনিয়ে সবায় ধরে।

                        চেনাশোনা হাসি-আলাপ মদের ফেনার মতো

                            বুদ্‌বুদিয়া ওঠে আবার গভীরে হয় গত।

                                   বাইরে রাত্রি তারায় তারাময়,

                            ফেনিল সুনীল তেপান্তরে মরণ-ঘেরা ভয়।

 

                       হঠাৎ কেন খেয়াল গেল মিছে,

                 জাহাজখানা ঘুরে আসি উপর থেকে নীচে।

           খানিক যেতেই পথ হারালুম, গলির আঁকেবাঁকে

                             কোথায় ওরা কোন্‌ অফিসার থাকে।

                       কোথাও দেখি সেলুন-ঘরে ঢুকে,

           ক্ষুর বোলাচ্ছে নাপিত সে কার ফেনায়-মগ্ন মুখে।

                            হোথায় রান্নাঘর ;

                       রাঁধুনেরা সার বেঁধেছে পৃথুল-কলেবর।

            গা ঘেঁষে কে গেল চলে ড্রেসিং-গাউন-পরা,

                       স্নানের ঘরে জায়গা পাবার ত্বরা।

                 নীচের তলার ডেকের ‘ পরে কেউ বা করে খেলা,

                       ডেক-চেয়ারে কারো শরীর মেলা,

                   বুকের উপর বইটা রেখে কেউ বা নিদ্রা যায়,

                       পায়চারি কেউ করে ত্বরিত পায়।

           স্টুয়ার্ড্‌ হোথায় জুগিয়ে বেড়ায় বরফী শর্বৎ।

                 আমি তাকে শুধাই আমার ক্যাবিন-ঘরের পথ

                                  নেহাত থতোমতো।

                 সে শুধাল, নম্বর তার কত।

                             আমি বললেম যেই,

                        নম্বরটা মনে আমার নেই —

                 একটু হেসে নিরুত্তরে গেল আপন কাজে,

                       ঘেমে উঠি উদ্‌বেগে আর লাজে।

                 আবার ঘুরে বেড়াই আগে পাছে,

           চেয়ে দেখি কোন্‌ ক্যাবিনের নম্বর কী আছে।

                 যেটাই দেখি মনেতে হয়, এইটে হতে পারে ;

                       সাহস হয় না ধাক্কা দিতে দ্বারে।