প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
এই-যে, মা তারিণী! এস এস, এই নাও আশীর্বাদ। তোমার ভাবনা নেই, তুমি অনেক দূরে এগিয়েছ। তোমরা মেয়েমানুষ, তোমাদের সরল ভক্তি, দেখে পুরুষদের শিক্ষা হোক।
(গুরু হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে) গুরুভার বটে— বন্ধনটা বেশ একটু চাপ দিয়েছিল মনটাকে। যাকগে, এত দিনে হাতের বেড়ি তোমার খসল। লোহার বেড়ির চেয়ে অনেক কঠিন— ঠিক কিনা, মা?
তারিনী। খুব ঠিক, বাবা। মনে হচ্ছে, খানিকটা মাংস কেটে নিলে।
গুরু। মাংস নয়, মাংস নয়, মোহপাশ। গ্রন্থি এই সবে আল্গা হতে শুরু করল, তার পরে ক্রমে ক্রমে—
তারিণী। না বাবা, আর পারব না। মেয়ের বিয়ের জন্যে শাশুড়ির আমলের গয়নাগুলি যত্ন করে রেখে দিয়েছি।
গুরু। (থলির মধ্যে বালাজোড়া ফেলে দিয়ে) আচ্ছা আচ্ছা, এখনকার মতো এই পর্যন্তই থাক্। তোমরা বলো সবাই— সোনা ছাই ইত্যাদি।
আরে বলদেও, ক্যা খবর?
বলদেও। (পায়ের কাছে হাজার টাকার নোট রেখে) খবর আঁখসে দেখ্ লিজিয়ে হজরৎ।
গুরু। ভালা ভালা, দিল তো খুশ হ্যায়?
বলদেও। পহেলা তো বহুৎ ঘবড়া গিয়া থা। রাত ভর মেরে জীবাত্মানেসে হাজারো দফে বাতায়া লিয়া কি, কুছ্ নেই, কুছ নেই, ইয়ে তো শ্রেফ কাগজ হ্যায়, হাওয়াসে চলা জাতা, আগসে জ্বল্ জাতা, পানীমেসে গল্ জাতা, ইস্কো কিম্মৎ কৌড়িসে ভি কমতি হ্যায়। লিকেন আত্মারাম সারা বখৎ ঘড়বড় কর্তে থে। মেরে ঐসী বুদ্ধি লগি যে ইয়ে কাগজ তো গুরুজিকে পাঁও পর ডারনেকে লায়েক একদম নেই হ্যায়— ইস্সে দো এক রূপৈয়া ভি অচ্ছি হ্যায়। পিছে ফজিরমে দো লোটা ভর ভাঙ যব পী লিয়া, তব সব দুরস্ত হো গয়া। মেরে দিল হালকা হো গিয়া ইয়ে কাগজকা মাফিক।
গুরু। জীতা রহো বাবা, পরমাত্মা তুঝকো ভালা করে। বলো সবাই—
গুরু। আজ ফকিরকে দেখছি নে যে বড়ো।
বলদেও। এক ঔরৎ ফকিরচাঁদজিকো আপনি সাথ লেকে আয়ি হ্যায়। নয়া আদমি, হমারা মালুম দিয়া কি ভিতর আকে চিল্লায়েগি— ইস্বাস্তে দোনোকো বাহার খাড়া রখ্খা হ্যায়। হুকুম মিল্নেসে লে আয়গা।
গুরু। কী সর্বনাশ! ঔরৎ! আরে নিয়ে আয়, এখ্খনি নিয়ে আয়। এইখানে একটা ভালো আসন পেতে দে, মেয়েটা হাতছাড়া না হয়!