বলাকা

     পায়ে পায়ে পথের ধারে ধারে

     কান্না-হাসির ফুল ফুটিয়ে যা রে,

     প্রাণ-বসন্তে তুই-যে দখিন হাওয়া

          গৃহ-বাঁধন-হারা!

 

     এই জনমের এই রূপের এই খেলা

          এবার করি শেষ ;

     সন্ধ্যা হল, ফুরিয়ে এল বেলা,

          বদল করি বেশ।

     যাবার কালে মুখ ফিরিয়ে পিছু

     কান্না আমার ছড়িয়ে যাব কিছু,

     সামনে সে-ও প্রেমের কাঁদন ভরা

          চির-নিরুদ্দেশ।

 

     বঁধুর দিঠি মধুর হয়ে আছে

          সেই অজানার দেশে।

     প্রাণের ঢেউ সে এমনি করেই নাচে

          এমনি ভালোবেসে।

     সেখানেতে আবার সে কোন্‌ দূরে

     আলোর বাঁশি বাজবে গো এই সুরে

     কোন্‌ মুখেতে সেই অচেনা ফুল

          ফুটবে আবার হেসে।

 

     এইখানে এক শিশির-ভরা প্রাতে

          মেলেছিলেম প্রাণ।

     এইখানে এক বীণা নিয়ে হাতে

          সেধেছিলেম তান।

     এতকালের সে মোর বীণাখানি

     এইখানেতেই ফেলে যাব জানি,

     কিন্তু ওরে হিয়ার মধ্যে ভরি

          নেব যে তার গান।