পূরবী
তা হলে পড়িত ধরা রোমাঞ্চিত নিঃশব্দ নিশায়
দুজনের জীবনের ছিল যা চরম অভিপ্রায়।
            তা হলে পরমলগ্নে, সখী,
সে ক্ষণকালের দীপে চিরকাল উঠিত আলোকি।

 

হে পান্থ, সে পথে তব ধূলি আজ করি যে সন্ধান—
বঞ্চিত মুহূর্তখানি পড়ে আছে, সেই তব দান।
অপূর্ণের লেখাগুলি তুলে দেখি, বুঝিতে না পারি—
চিহ্ন কোনো রেখে যাবে, মনে তাই ছিল কি তোমারি।
            ছিন্ন ফুল, এ কি মিছে ভান।
কথা ছিল শুধাবার, সময় হল যে অবসান।

 

গেল না ছায়ার বাধা; না-বোঝার প্রদোষ-আলোকে
স্বপ্নের চঞ্চল মূর্তি জাগায় আমার দীপ্ত চোখে
সংশয়মোহের নেশা— সে মূর্তি ফিরিছে কাছে কাছে
আলোতে আঁধারে মেশা, তবু সে অনন্ত দূরে আছে
            মায়াচ্ছন্ন লোকে।
অচেনার মরীচিকা আকুলিছে ক্ষণিকার শোকে।

 

খোলো খোলো, হে আকাশ, স্তব্ধ তব নীল যবনিকা।
খুঁজিব তারার মাঝে চঞ্চলের মালার মণিকা।
খুঁজিব সেথায় আমি যেথা হতে আসে ক্ষণতরে
আশ্বিনে গোধূলি-আলো, যেথা হতে নামে পৃথ্বী-’পরে
            শ্রাবণের সায়াহ্নযূথিকা,
যেথা হতে পরে ঝড় বিদ্যুতের ক্ষণদীপ্ত টিকা।