পূরবী
                                 প্রাণের দুরন্ত ঝড়ে,
                       রূপের উন্মত্ত নৃত্যে, বিশ্বময়
                   ছড়ায় দক্ষিণে বামে সৃজন প্রলয়;
              সে বিস্ময় সুখে দুঃখে গর্জি উঠি কয়—
                          ‘জয়, জয়, জয়।’

 

           তোমাদের মাঝখানে আকাশ অনন্ত ব্যবধান;
                     ঊর্ধ্ব হতে তাই নামে গান।
                  চিরবিরহের নীল পত্রখানি-’পরে
                তাই লিপি লেখা হয় অগ্নির অক্ষরে।
                       বক্ষে তারে রাখো,
                     শ্যাম আচ্ছাদনে ঢাকো;
                             বাক্যগুলি
                     পুষ্পদলে রেখে দাও তুলি—
                   মধুবিন্দু হয়ে থাকে নিভৃত গোপনে;
                      পদ্মের রেণুর মাঝে গন্ধের স্বপনে
                             বন্দী কর তারে;
              তরুণীর প্রেমাবিষ্ট আঁখির ঘনিষ্ঠ অন্ধকারে
                                 রাখ তারে ভরি;
              সিন্ধুর কল্লোলে মিলি, নারিকেলপল্লবে মর্মরি,
                     সে বাণী ধ্বনিতে থাকে তোমার অন্তরে;
              মধ্যাহ্নে শোনো সে বাণী অরণ্যের নির্জন নির্ঝরে।

 

              বিরহিণী, সে লিপির যে উত্তর লিখিতে উন্মনা
                         আজও তাহা সাঙ্গ হইল না।
              যুগে যুগে বারম্বার লিখে লিখে
            বারম্বার মুছে ফেল; তাই দিকে দিকে
                     সে ছিন্ন কথার চিহ্ন পুঞ্জ হয়ে থাকে;
            অবশেষে একদিন জ্বলজ্জটা ভীষণ বৈশাখে
                         উন্মত্ত ধূলির ঘূর্ণিপাকে
                             সব দাও ফেলে
                                 অবহেলে,