পূরবী
‘মোরে সে ভালোবাসে।’
অধীর হাওয়া নদীর পারে
খেপার মতো কহিছে কারে,
‘বলো তো কী-যে করি?’
শিহরি উঠি শিরীষ বলে, ‘কে ডাকে, মরি মরি!’
কেন যে আজি উঠিল বাজি আকাশ-কাঁদা বাঁশি
জানিস তাহা না কি?
রঙিন যত মেঘের মতো কী যায় মনে ভাসি
কেন যে থাকি থাকি?
অবুঝ
তোরা তাহারে বুঝি
দূরের পানে ফিরিস খুঁজি—
বাহিরে-আঁখি-বাঁধা,
প্রাণের মাঝে চাহিস না যে, তাই তো লাগে ধাঁধা।
পুলকে-কাঁপা কনকচাঁপা বুকের মধু-কোষে
পেয়েছে দ্বার নাড়া,
এমন করে কুঞ্জ ভরে সহজে তাই তো সে
দিয়েছে তারি সাড়া।
সহসা বনমল্লিকা যে
পেয়েছে তারে আপন-মাঝে,
ছুটিয়া দলে দলে
‘এই যে তুমি’ ‘এই যে তুমি’ আঙুল তুলে বলে।
পেয়েছে তারা, গেয়েছে তারা, জেনেছে তারা সব
আপন মাঝখানে—
তাই এ শীতে জাগালো গীতে বিপুল কলরব
দ্বিধাবিহীন তানে।
ওদের সাথে জাগ্ রে কবি,
হৃৎকমলে দেখ্ সে ছবি,
ভাঙুক মোহঘোর।
বনের তলে নবীন এল, মনের তলে তোর।