পূরবী
বসন্তের বন্যাস্রোতে সন্ন্যাসের হল অবসান;
জটিল জটার বন্ধে জাহ্নবীর অশ্রুকলতান
                            শুনিলে তন্ময়।
             সেদিন ঐশ্বর্য তব
             উন্মেষিল নব নব
অন্তরে উদ্‌বেল হল আপনাতে আপন বিস্ময়।
আপনি সন্ধান পেলে আপনার সৌন্দর্য উদার,
আনন্দে ধরিলে হাতে জ্যোতির্ময় পাত্রটি সুধার
                            বিশ্বের ক্ষুধার।

 

সেদিন, উন্মত্ত তুমি, যে নৃত্যে ফিরিলে বনে বনে
সে-নৃত্যের ছন্দে-লয়ে সংগীত রচিনু ক্ষণে ক্ষণে
                            তব সঙ্গ ধরে।
             ললাটের চন্দ্রালোকে
             নন্দনের স্বপ্ন-চোখে
নিত্য-নূতনের লীলা দেখেছিনু চিত্ত মোর ভরে।
দেখেছিনু সুন্দরের অন্তর্লীন হাসির রঙ্গিমা,
দেখেছিনু লজ্জিতের পুলকের কুণ্ঠিত ভঙ্গিমা,
                                রূপ-তরঙ্গিমা।

 

সেদিনের পানপাত্র, আজ তার ঘুচালে পূর্ণতা?
মুছিলে চুম্বনরাগে-চিহ্নিত বঙ্কিম রেখা-লতা
                                রক্তিম অঙ্কনে?
             অগীত সংগীতধার,
             অশ্রুর সঞ্চয়ভার
অযত্নে লুণ্ঠিত সে কি ভগ্নভাণ্ডে তোমার অঙ্গনে?
তোমার তাণ্ডব নৃত্যে চূর্ণ চূর্ণ হয়েছে সে ধূলি?
নিঃস্ব কালবৈশাখীর নিশ্বাসে কি উঠিছে আকুলি
                                লুপ্ত দিনগুলি?

 

নহে নহে, আছে তারা; নিয়েছ তাদের সংহরিয়া
নিগূঢ় ধ্যানের রাত্রে, নিঃশব্দের মাঝে সম্বরিয়া