সোনার তরী

         কাজের অম্বেষণে।

কবি নিজ মনে ফিরিছে লুব্ধ,

যেন সে তাহার নয়ন মুগ্ধ

কল্পধেনুর অমৃত-দুগ্ধ

         দোহন করিছে মনে।

কবির রমণী বাঁধি কেশপাশ,

সন্ধ্যার মতো পরি রাঙা বাস

বসি একাকিনী বাতায়ন-পাশ,

         সুখহাস মুখে ফুটে।

কপোতের দল চারি দিকে ঘিরে

নাচিয়া ডাকিয়া বেড়াইছে ফিরে,

যবের কণিকা তুলিয়া সে ধীরে

         দিতেছে চঞ্চুপুটে।

অঙ্গুলি তার চলিছে যেমন

কত কী যে কথা ভাবিতেছে মন,

হেনকালে পথে ফেলিয়া নয়ন

         সহসা কবিরে হেরি

বাহুখানি নাড়ি মৃদু ঝিনি ঝিনি

বাজাইয়া দিল করকিঙ্কিণী,

হাসিজালখানি অতুলহাসিনী

ফেলিলা কবিরে ঘেরি।

  কবির চিত্ত উঠে উল্লাসি,

অতি সত্বর সম্মুখে আসি

কহে কৌতুকে মৃদু মৃদু হাসি,

        ‘ দেখো কী এনেছি বালা।

নানা লোকে নানা পেয়েছে রতন

আমি আনিয়াছি করিয়া যতন

তোমার কণ্ঠে দেবার মতন

         রাজকণ্ঠের মালা। '

এত বলি মালা শির হতে খুলি

প্রিয়ার গলায় দিতে গেল তুলি —

কবিনারী রোষে কর দিল ঠেলি,