সোনার তরী

শুভ দিনখন দেখো পাঁজি খুলি,

সঙ্গে করিয়া লহো পুঁথিগুলি,

ক্ষণিকের তরে আলস্য ভুলি

        চলো রাজসভামাঝে।

আমাদের রাজা গুণীর পালক,

মানুষ হইয়া গেল কত লোক —

ঘরে তুমি জমা করিলে শোলোক

         লাগিবে কিসের কাজে! '

কবির মাথায় ভাঙি পড়ে বাজ ;

ভাবিল, বিপদ দেখিতেছি আজ,

কখনো জানি নে রাজা-মহারাজ —

         কপালে কী জানি আছে! '

মুখে হেসে বলে, ‘ এই বৈ নয়!

আমি বলি আরো কী করিতে হয় —

প্রাণ দিতে পারি, শুধু জাগে ভয়

         বিধবা হইবে পাছে।

যেতে যদি হয় দেরিতে কী কাজ,

ত্বরা করে তবে নিয়ে এসো সাজ —

হেমকুণ্ডল, মণিময় তাজ,

         কেয়ূর, কনকহার।

বলে দাও মোর সারথিরে ডেকে

ঘোড়া বেছে নেয় ভালো ভালো দেখে,

কিংকরগণ সাথে যাবে কে কে

         আয়োজন করো তার। '

ব্রাহ্মণী কহে, ‘ মুখাগ্রে যার

বাধে না কিছুই, কী চাহে সে আর,

মুখ ছুটাইলে রথাশ্বে আর

         না দেখি আবশ্যক।

নানা বেশভূষা হীরা রুপা সোনা

এনেছি পাড়ার করি উপাসনা —

সাজ করে লও পুরায়ে বাসনা,

         রসনা ক্ষান্ত হোক। '