কথা

যে ললিত সুখে হৃদয় অধীর

মনে হল তাহা গত যামিনীর

স্খলিত দলিত শুষ্ক কামিনীর

                   মালিকা।

বাতায়ন খুলে যায় ঘরে ঘরে,

ঘুমভাঙা আঁখি ফুটে থরে থরে

অন্ধকার পথ কৌতূহলভরে

                    নেহারি।

‘ জাগো, ভিক্ষা দাও’ সবে ডাকি ডাকি

সুপ্ত সৌধে তুলি নিদ্রাহীন আঁখি

শূন্য রাজবাটে চলেছে একাকী

                   ভিখারি।

ফেলি দিল পথে বণিকধনিকা

মুঠি মুঠি তুলি রতনকণিকা —

কেহ কণ্ঠহার, মাথার মণিকা

                   কেহ গো।

ধনী স্বর্ণ আনে থালি পুরে পুরে,

সাধু নাহি চাহে, পড়ে থাকে দূরে —

ভিক্ষু কহে, ‘ ভিক্ষা আমার প্রভুরে

                   দেহো গো।’

বসনে ভূষণে ঢাকি গেল ধূলি,

কনকে রতনে খেলিল বিজুলি,

সন্ন্যাসী ফুকারে লয়ে শূন্য ঝুলি

                   সঘনে —

‘ ওগো পৌরজন, করো অবধান,

ভিক্ষুশ্রেষ্ঠ তিনি বুদ্ধ ভগবান,

দেহো তারে নিজ সর্বশ্রেষ্ঠ দান

                   যতনে।’

ফিরে যায় রাজা, ফিরে যায় শেঠ,

মিলে না প্রভুর যোগ্য কোনো ভেট,

বিশাল নগরী লাজে রহে হেঁট —

                   আননে।