প্রভাতসংগীত
কত গাছ, কত ছায়া জটিল বটের মূল--
          তীরে বালুকার ’পরে,
          ছেলেমেয়ে খেলা করে,
সন্ধ্যায় ভাসায় দীপ, প্রভাতে ভাসায় ফুল।
ভাসিতে ভাসিতে শুধু দেখিতে দেখিতে যাব
কত দেশ, কত মুখ, কত-কী দেখিতে পাব।
          কোথা বালকের হাসি,
          কোথা রাখালের বাঁশি,
সহসা সুদূর হতে অচেনা পাখির গান।
         কোথাও বা দাঁড় বেয়ে
         মাঝি গেল গান গেয়ে,
কোথাও বা তীরে বসে পথিক ধরিল তান।
শুনিতে শুনিতে যাই আকাশেতে তুলে আঁখি--
আকাশেতে ভাসে মেঘ, আকাশেতে ওড়ে পাখি।
হয়তো বরষা কাল-- ঝর ঝর বারি ঝরে,
পুলকরোমাঞ্চ ফুটে জাহ্নবীর কলেবরে--
          থেকে থেকে ঝন্‌ ঝন্‌
          ঘন বাজ-বরিষন,
থেকে থেকে বিজলীর চমকিত চকমকি।
           বহিছে পুরব বায়,
           শীতে শিহরিছে কায়,
গহন জলদে দিবা হয়েছে আঁধারমুখী।


           সেই সেই ছেলেবেলা
           আনন্দে করেছি খেলা
প্রকৃতি গো, জননী গো, কেবলি তোমারি কোলে।
তার পরে কী যে হল-- কোথা যে গেলেম চলে।
হৃদয় নামেতে এক বিশাল অরণ্য আছে,
          দিশে দিশে নাহিকো কিনারা,
          তারি মাঝে হ’নু, পথহারা।
          সে বন আঁধারে ঢাকা
          গাছের জটিল শাখা