চিত্রাঙ্গদা
অর্জুনের প্রবেশ ও ধ্যানে উপবেশন
তাঁকে প্রদক্ষিণ ক’রে চিত্রাঙ্গদার নৃত্য

  চিত্রাঙ্গদা।  আমি  তোমারে করিব নিবেদন
            আমার হৃদয় প্রাণ মন॥ স্বরলিপি
    অর্জুন।  ক্ষমা করো আমায়– আমায়–
           বরণযোগ্য নহি বরাঙ্গনে– ব্রহ্মচারী ব্রতধারী॥ স্বরলিপি

প্রস্থান

  চিত্রাঙ্গদা।  হায় হায়, নারীরে করেছি ব্যর্থ
               দীর্ঘকাল জীবনে আমার।
                ধিক্‌ ধনুঃশর!
                  ধিক্‌ বাহুবল!
           মুহূর্তের অশ্রুবন্যাবেগে
             ভাসায়ে দিল যে মোর পৌরুষসাধনা। 
               অকৃতার্থ যৌবনের দীর্ঘশ্বাসে
                   বসন্তেরে করিল ব্যাকুল॥
                   –
           রোদন-ভরা এ বসন্ত,   সখী,
                কখনো আসে নি বুঝি আগে।
           মোর  বিরহবেদনা রাঙালো  কিংশুকরক্তিমরাগে। স্বরলিপি
  সখীগণ।   তোমার  বৈশাখে ছিল প্রখর রৌদ্রের জ্বালা,
           কখন বাদল আনে আষাঢ়ের পালা।
                হায় হায় হায়!
  চিত্রাঙ্গদা।  কুঞ্জদ্বারে বনমল্লিকা
           সেজেছে পরিয়া নব পত্রালিকা,
           সারা দিন-রজনী অনিমিখা
                কার পথ চেয়ে জাগে।
  সখীগণ।   কঠিন পাষাণে কেমনে গোপনে ছিল,
           সহসা ঝরনা নামিল অশ্রুঢালা।
                হায় হায় হায়!
  চিত্রাঙ্গদা।  দক্ষিণসমীরে দূর গগনে
           একেলা বিরহী গাহে বুঝি গো।