বিজ্ঞানী

বউদি বললে, যেটা পেয়েছ সেই দিয়েই কাজ চালিয়ে নেও, যেটা পাও নি সেটা কোথাও পাবে না।

নীলু বললে, অন্তত সেটা পাওয়া যেতে পারে কুণ্ডুদের দোকানে।

বউদি বললে, না গো, দোকানে সে মাল মেলে না।

নীলু বললে, তা হলে সেটা চুরি গিয়েছে।

তোমার সব জিনিসই তো চুরি গিয়েছে, যখন চোখে পাও না দেখতে। এখন চুপচাপ করে এই কলম নিয়েই লেখো, আমাকেও কাজ করতে দাও। পাড়াসুদ্ধ অস্থির করে তুলেছ।

সামান্য একটা কলম পাব না কেন শুনি।

বিনি পয়সায় মেলে না বলে।

দেব টাকা — ওরে ভুতো।

আজ্ঞে—

টাকার থলিটা যে খুঁজে পাচ্ছি না।

ভুতো বললে, সেটা যে ছিল আপনার জামার পকেটে।

তাই নাকি।

পকেট খুঁজে দেখলে থলি আছে, থলিতে টাকা নেই। টাকা কোথায় গেল।

খুঁজতে বেরোল টাকা। ডেকে পাঠালে ধোবাকে।

আমার পকেটের থলি থেকে টাকা গেল কোথায়।

ধোবা বললে, আমি কী জানি। ও জামা আমি কাচি নি।

ডাকল ওসমান দর্জিকে।

আমার থলি থেকে টাকা গেল কোথায়।

ওসমান রেগে উঠে বললে, আছে আপনার লোহার সিন্দুকে।

জামাইবাড়ি থেকে স্ত্রী ফিরে এসে বললে, হয়েছে কী।

নীলমণি বললে, বাড়িতে ডাকাত পুষেছি। পকেট থেকে টাকা নিয়ে গেছে।

স্ত্রী বললে, হায় রে কপাল— সেদিন যে বাড়িওয়ালাকে বাড়িভাড়া শোধ করে দিলে ৩৫‌ টাকা।

তাই নাকি। বাড়িওয়ালা যে বাড়ি ছাড়বার জন্য আমাকে নোটিস পাঠিয়েছিল।

তুমি ভাড়া শোধ করে দিয়েছিলে তার পরেই।

সে কী কথা। আমি যে বাদুড়-বাগানে নিমচাঁদ হালদারের কাছে গিয়ে তার বাড়ি ভাড়া নিয়েছি।

স্ত্রী বললে, বাদুড়-বাগান, সে আবার কোন্‌ চুলোয়।

নীলমণি বললে, রোসো, ভেবে দেখি। সে যে কোন্‌ গলিতে কোন্‌ নম্বরে তা তো মনে পড়ছে না। কিন্তু লোকটির সঙ্গে লেখাপড়া হয়ে গেছে—দেড় বছরের জন্য ভাড়া নিতে হবে।

স্ত্রী বললে, বেশ করেছ, এখন দুটো বাড়ির ভাড়া সামলাবে কে।

নীলমণি বললে, সেটা তো ভাবনার কথা নয়। আমি ভাবছি, কোন্‌ নম্বর, কোন্‌ গলি। আমার নোট-বুকে বাদুড়-বাগানের বাসা লেখা আছে। কিন্তু, মনে পড়ছে না, গলিটার নম্বর লেখা আছে কি না।