বনবাণী
                  মরুৎ
হে পবন কর নাই গৌণ,
       আষাঢ়ে বেজেছে তব বংশী।
তাপিত নিকুঞ্জের মৌন
       নিশ্বাসে দিলে তুমি ধ্বংসি।
এ তরু খেলিবে তব সঙ্গে,
       সংগীত দিয়ো এরে ভিক্ষা।
দিয়ো তব ছন্দের রঙ্গে
       পল্লবহিল্লোল শিক্ষা।
 
                  ব্যোম
আকাশ, তোমার সহাস উদার দৃষ্টি
মাটির গভীরে জাগায় রূপের সৃষ্টি।
তব আহ্বানে এই তো শ্যামলমূর্তি
আলোক-অমৃতে খুঁজিছে প্রাণের পূর্তি।
দিয়েছ সাহস, তাই তব নীলবর্ণে
বর্ণ মিলায় আপন হরিৎপর্ণে।
তরুতরুণেরে করুণায় করো ধন্য,
দেবতার স্নেহ পায় যেন এই বন্য।
 
                 মাঙ্গলিক
প্রাণের পাথেয় তব পূর্ণ হোক হে শিশু চিরায়ু,
বিশ্বের প্রসাদস্পর্শে শক্তি দিক সুধাসিক্ত বায়ু।
হে বালকবৃক্ষ, তব উজ্জ্বল কোমল কিশলয়
আলোক করিয়া পান ভান্ডারেতে করুক সঞ্চয়
প্রচ্ছন্ন প্রশান্ত তেজ।   লয়ে তব কল্যাণকামনা
শ্রাবণবর্ষণযজ্ঞে তোমারে করিনু অভ্যর্থনা। —
থাকো প্রতিবেশী হয়ে, আমাদের বন্ধু হয়ে থাকো।
মোদের প্রাঙ্গণে ফেলো ছায়া, পথের কঙ্কর ঢাকো
কুসুমবর্ষণে ; আমাদের বৈতালিক বিহঙ্গমে
শাখায় আশ্রয় দিয়ো ; বর্ষে বর্ষে পুষ্পিত উদ্যমে
অভিনন্দনের গন্ধ মিলাইয়ো বর্ষাগীতিকায়