আমার এই শীল খণ্ডিত হয় নি, এতে ছিদ্র হয় নি, আমার এই শীল জোর করে রক্ষিত হয় নি অর্থাৎ ইচ্ছা করেই রাখছি, এই শীলে পাপ স্পর্শ করে নি, এই শীল ধন মান প্রভৃতি কোনো স্বার্থসাধনের জন্য আচরিত নয়, এই শীল বিজ্ঞজনের অনুমোদিত, এই শীল বিদলিত হয় নি এবং এই শীল মুক্তিপ্রবর্তন করবে।
এই বলে আর্যশ্রাবকগণ নিজ নিজ শীলের গুণ বারম্বার স্মরণ করেন। এই শীলগুলিই হচ্ছে মঙ্গল। মঙ্গললাভেই প্রেম ও মুক্তিলাভের সোপান। বুদ্ধদেব কাকে যে মঙ্গল বলেছেন তা ‘মঙ্গল সুত্তে’ কথিত আছে। সেটি অনুবাদ করে দিই–
বহূ দেবা মনুস্সা চ মঙ্গলানি অচিনন্তয়ুং
আকঙ্খমানা সোত্থানং ব্রূহি মঙ্গলমুক্তমং।
বুদ্ধকে প্রশ্ন করা হচ্ছে যে–
বহু দেবতা বহু মানুষ যাঁরা শুভ আকাঙ্ক্ষা করেন তাঁরা মঙ্গলের চিন্তা করে এসেছেন, সেই মঙ্গলটি কী বলো।
বুদ্ধ উত্তর দিচ্ছেন–
অসেবনা চ বালানং পণ্ডিতানঞ্চ সেবনা
পূজা চ পূজনেয়্যানং এতং মঙ্গলমুত্তমং।
অসৎগণের সেবা না করা, সজ্জনের সেবা করা, পূজনীয়কে পূজা করা এই হচ্ছে উত্তম মঙ্গল।
পতিরূপদেসবাসো পুব্বে চ কতপুঞ্ঞতা
অত্তসম্মাপণিধি চ, এতং মঙ্গলমুত্তমং।
যে দেশে ধর্মসাধন বাধা পায় না সেই দেশে বাস, পূর্বকৃত পুণ্যকে বর্ধিত করা, আপনাকে সৎকর্মে প্রণিধান করা এই উত্তম মঙ্গল।
বহুসত্থঞ্চ সিপ্পঞ্চ, বিনয়ো চ সুসিক্খিতো
সুভাসিতা চ যা বাচা এতং মঙ্গলমুত্তমং।
বহু শাস্ত্র-অধ্যয়ন, বহু শিল্পশিক্ষা, বিনয়ে সুশিক্ষিত হওয়া এবং সুভাষিত বাক্য বলা এই উত্তম মঙ্গল।
মাতাপিতু-উপট্ঠাণং পুত্তদারস্স সংগহো
অনাকুলা চ কম্মানি এতং মঙ্গলমুত্তমং।
মাতা পিতাকে পূজা করা, স্ত্রী পুত্রের কল্যাণ করা, অনাকুল কর্ম করা এই উত্তম মঙ্গল।
দানঞ্চ ধম্মচরিয়ঞ্চ ঞ্ঞাতকানঞ্চ সংগহো
অনবজ্জানি কম্মানি, এতং মঙ্গলমুত্তমং।
দান,ধর্মচর্চা, জ্ঞাতিবর্গের উপকার, অনিন্দনীয় কর্ম এই উত্তম মঙ্গল।
আরতী বিরতি পাপা, মজ্জপানা চ সঞ্ঞমো
অপ্পমাদো চ ধম্মেসু, এতং মঙ্গলমুত্তমং।
পাপে অনাসক্তি এবং বিরতি, মদ্যপানে বিতৃষ্ণা, ধর্মকর্মে অপ্রমাদ এই উত্তম মঙ্গল।
গারবো চ নিবাতো চ সন্তু্ট্ঠী চ কতঞ্ঞুতা
কালেন ধম্মসবনং এতং মঙ্গলমুত্তমং।