Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
ছেলেভুলানো ছড়া : ২,৩
ছেলেভুলানো ছড়া : ২
কুসুম কুসুম পানের বিঁড়ে॥
রাই রাই রাই রাবণ।
হলুদ ফুলে কলুদ ফুল।
তারার নামে টগ্গর ফুল॥
এক গাচি করে মেয়ে খাঁড়া।
এক গাচি করে পুরুষ খাঁড়া॥
জামাই বেটা ভাত খাবি তো
এখানে এস বোস্।
খা গণ্ডা গণ্ডা কাঁটালের কোষ॥
রাই রাই রাই রাবণ।
হলুদ ফুলে কলুদ ফুল।
তারার নামে টগ্গর ফুল॥
এক গাচি করে মেয়ে খাঁড়া।
এক গাচি করে পুরুষ খাঁড়া॥
জামাই বেটা ভাত খাবি তো
এখানে এস বোস্।
খা গণ্ডা গণ্ডা কাঁটালের কোষ॥
উপরি-উদ্ধৃত ছড়াগুলির মধ্যে মূল পাঠ কোনটি, তাহা নির্ণয় করা অসম্ভব এবং মূল পাঠটি রক্ষা করিয়া অন্য পাঠগুলি ত্যাগ করাও উচিত হয় না। ইহাদের পরিবর্তনগুলিও কৌতুকাবহ এবং বিশেষ আলোচনার যোগ্য। ‘আগডুম বাগডুম ঘোড়াডুম সাজে’–এই ছত্রটির কোনো পরিষ্কার অর্থ আছে কি না জানি না; অথবা যদি ইহা অন্য কোনো ছত্রের অপভ্রংশ হয় তবে সে ছত্রটি কী ছিল তাহাও অনুমান করা সহজ নহে। কিন্তু ইহা স্পষ্ট দেখা যাইতেছে, প্রথম কয়েক ছত্র বিবাহযাত্রার বর্ণনা। দ্বিতীয় ছত্রে যে বাজনা কয়েকটির উল্লেখ আছে, তাহা ভিন্ন ভিন্ন পাঠে কতই বিকৃত হইয়াছে। আবার ভিন্ন স্থান হইতে আমরা এই ছড়ার আর-একটি পাঠ প্রাপ্ত হইয়াছি, তাহাতে আছে–
আগ্ডম বাগ্ডম ঘোড়াডম সাজে।
ডান মেকড়া ঘাঘর বাজে॥
বাজতে বাজতে পড়ল টুরি।
টুরি গেল কমলাপুরি॥
ডান মেকড়া ঘাঘর বাজে॥
বাজতে বাজতে পড়ল টুরি।
টুরি গেল কমলাপুরি॥
ভাষার যে ক্রমশ কিরূপে রূপান্তর হইতে থাকে, এই-সকল ছড়া হইতে তাহার প্রত্যক্ষ দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়।
ছড়া-সংগ্রহ
১
মাসি পিসি বনগাঁবাসী, বনের ধারে ঘর।
কখনো মাসি বলেন না যে খই মোওয়াটা ধর্॥
কিসের মাসি, কিসের পিসি, কিসের বৃন্দাবন।
এত দিনে জানিলাম মা বড়ো ধন॥
মাকে দিলুম আমন-দোলা।
বাপকে দিলুম নীলে ঘোড়া॥
আপনি যাব গৌড়।
আনব সোনার মউর॥
তাইতে দেব ভায়ের বিয়ে।
আপনি নাচব ধেয়ে॥
মাসি পিসি বনগাঁবাসী, বনের ধারে ঘর।
কখনো মাসি বলেন না যে খই মোওয়াটা ধর্॥
কিসের মাসি, কিসের পিসি, কিসের বৃন্দাবন।
এত দিনে জানিলাম মা বড়ো ধন॥
মাকে দিলুম আমন-দোলা।
বাপকে দিলুম নীলে ঘোড়া॥
আপনি যাব গৌড়।
আনব সোনার মউর॥
তাইতে দেব ভায়ের বিয়ে।
আপনি নাচব ধেয়ে॥