হর। প্রিয়তমে, তবে অবহিত হইয়া মনোহর কথা শ্রবণ করো। শ্বেতবরাহ কল্পাব্দের পর হইতে ছয় জন মনু গত হইয়াছেন। প্রথম স্বায়ম্ভূব মনু। দ্বিতীয় স্বরোচিষ মনু। তৃতীয় ঐত্তমজ মনু। চতুর্থ তামস মনু। পঞ্চম রৈবত মনু। ষষ্ঠ চাক্ষুষ মনু। সম্প্রতি সপ্তম মনু বৈবস্বতের অধিকার চলিতেছে। সপ্তবিংশতি যুগ গত হইয়াছে। অষ্টবিংশতি যুগে কলিযুগের প্রারম্ভ। তত্র চতুর্যুগের পরিমাণ বিংশতিসহস্রাধিক ত্রিচত্বারিংশল্লক্ষ-পরিমিত-বর্ষ।
পার্বতী। ( স্বগত) অহো কী শ্রুতিমনোহর! (প্রকাশ্যে) প্রাণেশ্বর, এবার সত্যযুগোৎপত্তির কাল নিরূপণ করিয়া দাসীর কর্ণকুহর সুধাসিক্ত করো।
হর। প্রিয়ে, তবে শ্রবণ করো। বৈশাখ শুক্লপক্ষ অক্ষয়তৃতীয়া রবিবারে সত্যযুগোৎপত্তি। ইত্যাদি।
(এইরূপে কাব্যকৌশলসহকারে প্রথম অঙ্কে একে একে চারি যুগের উৎপত্তিবিবরণ বর্ণিত হইবে। - লেখক)
দ্বিতীয় অঙ্ক। দৃশ্য কৈলাস
বৃষস্কন্ধে মহেশ এবং শিলাতলে হৈমবতী আসীনা। নাটকের মধ্যে বৈচিত্র্যসাধনের জন্য হরপার্বতীর নাম পরিবর্তন করা গিয়াছে এবং দ্বিতীয় দৃশ্যে বৃষের অবতারণা করা হইয়াছে। যদি কোনো রঙ্গভূমিতে এই নাটকের অভিনয় হয় নিশ্চয়ই বৃষ সাজিবার লোকের অভাব হইবে না। বক্ষ্যমাণ অঙ্কে পার্বতী মধুর সম্ভাষণে মহেশ্বরের নিকট হইতে বর্ষফল জানিয়া লইতেছেন। এই অঙ্কে প্রসঙ্গক্রমে সোনার ভারতের দুর্দশায় পার্বতীর বিলাপ এবং রেলগাড়ি প্রচলিত হওয়াতে আর্যাবর্তের কী কী অনিষ্ট ঘটিয়াছে তাহা কৌশলে বর্ণিত হইয়াছে। অবশেষে আঢ়কেশ ফল কুড়বেশ ফল এবং গোটিকাপাত ফল-নামক সুখশ্রাব্য প্রসঙ্গে এই অঙ্কের সমাপ্তি।
তৃতীয় অঙ্ক এবং চতুর্থ অঙ্ক। দৃশ্য কৈলাস।
গজচর্মে ত্র্যম্বক ও অম্বিকা আসীনা
নাট্যশালায় গজচর্মের আয়োজন যদি অসম্ভব হয়, কার্পেট পাতিয়া দিলেই চলিবে। এই দুই অঙ্কে বারবেলা, কালবেলা, পরিঘযোগ, বিষ্কম্ভযোগ, অসৃকযোগ, বিষ্টিভদ্রা, মহাদগ্ধা, নক্ষত্রফল, রাশিফল, ববকরণ, বালবকরণ, তৈতিলকরণ, কিন্তুঘ্নকরণ, ঘাতচন্দ্র, তারাপ্রতিকার, গোচরফল প্রভৃতির বর্ণনা আছে। অভিনেতাদিগের প্রতি লেখকের সবিনয় অনুরোধ, এই দুই অঙ্কে তাঁহারা যথাযথ ভাব রক্ষা করিয়া যেন অভিনয় করেন–কারণ অরিদ্বিদশ এবং মিত্রষড়ষ্টক-কথনে যদি অভিনেতার কণ্ঠস্বর ও অঙ্গভঙ্গিতে ভিন্নতা না থাকে, তবে দর্শকগণের চিত্তে কখনোই অনুরূপ ভাব উচ্ছ্বসিত হইয়া উঠিবে না। – লেখক