Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
প্রকৃতির প্রতিশোধ -চতুর্দশ দৃশ্য, ৩৭
প্রকৃতির প্রতিশোধ
হাসিমুখে চলিয়াছে আপনার কাজে।
ওই ধান কাটে, ওই করিছে কর্ষণ,
ওই গাভী নিয়ে মাঠে চলেছে গাহিয়া।
ওই যে পূজার তরে তুলিতেছে ফুল,
ওই নৌকা লয়ে যাত্রী করিতেছে পার।
ওই ধান কাটে, ওই করিছে কর্ষণ,
ওই গাভী নিয়ে মাঠে চলেছে গাহিয়া।
ওই যে পূজার তরে তুলিতেছে ফুল,
ওই নৌকা লয়ে যাত্রী করিতেছে পার।
কেহ বা করিছে স্নান, কেহ তুলে জল,
ছেলেরা ধুলায় বসে খেলা করিতেছে,
সখারা দাঁড়ায়ে পথে কহে কত কথা।
ছেলেরা ধুলায় বসে খেলা করিতেছে,
সখারা দাঁড়ায়ে পথে কহে কত কথা।
আহা সে অনাথা বালা কোথায় না জানি!
কে তারে আশ্রয় দেবে, কে তারে দেখিবে!
ব্যথিত হৃদয় নিয়ে কার কাছে যাবে,
কে তারে পিতার মতো বুকে নিয়ে তুলে
নয়নের অশ্রুজল দিবে মুছাইয়া!
কী করেছি, কী বলেছি, সব গেছি ভুলে,
বিস্মৃত দুঃস্বপ্ন শুধু চেপে আছে প্রাণে—
একখানি মুখ শুধু মনে পড়িতেছে,
দুটি আঁখি চেয়ে আছে করুণ বিস্ময়ে।
আহা, কাছে যাই তার— বুকে নিয়ে তারে
শুধাই গে কী হয়েছে কী করেছি আমি!
একটি কুটিরে মোরা রহিব দুজনে,
রামায়ণ হতে তারে শুনাব কাহিনী—
কে তারে আশ্রয় দেবে, কে তারে দেখিবে!
ব্যথিত হৃদয় নিয়ে কার কাছে যাবে,
কে তারে পিতার মতো বুকে নিয়ে তুলে
নয়নের অশ্রুজল দিবে মুছাইয়া!
কী করেছি, কী বলেছি, সব গেছি ভুলে,
বিস্মৃত দুঃস্বপ্ন শুধু চেপে আছে প্রাণে—
একখানি মুখ শুধু মনে পড়িতেছে,
দুটি আঁখি চেয়ে আছে করুণ বিস্ময়ে।
আহা, কাছে যাই তার— বুকে নিয়ে তারে
শুধাই গে কী হয়েছে কী করেছি আমি!
একটি কুটিরে মোরা রহিব দুজনে,
রামায়ণ হতে তারে শুনাব কাহিনী—
সন্ধ্যার প্রদীপ জ্বেলে, শাস্ত্রকথা শুনে,
বালিকা কোলেতে মোর পড়িবে ঘুমায়ে।
বালিকা কোলেতে মোর পড়িবে ঘুমায়ে।
[প্রস্থান