ক্ষমিবে তাহারে?
বিক্রমদেব। বুঝিতে পারি নে দেবী,
কী বলিছ তুমি।
চন্দ্রসেন। কিছু নয়, কিছু নয়।
আমি তবে বলি বুঝাইয়া। সৈন্য যবে
মোর কাছে মাগিল কুমার আমি তারে
কহিলাম, বিক্রম স্নেহের পাত্র মোর—
তার সনে যুদ্ধ নাহি সাজে। সেই ক্ষোভে
ক্রুদ্ধ যুবা প্রজাদের ঘরে ঘরে গিয়া
বিদ্রোহে করিল উত্তেজিত। অসন্তুষ্ট
মহারানী তাই ; রাজবিদ্রোহীর শাস্তি
করিছে প্রার্থনা তোমা-কাছে। গুরুদণ্ড
দিয়ো না তাহারে, সে যে অবোধ বালক।
বিক্রমদেব। আগে তারে বন্দী করে আনি। তার পরে
যথাযোগ্য করিব বিচার।
রেবতী। প্রজাগণ
লুকায়ে রেখেছে তারে। আগুন জ্বালাও
ঘরে ঘরে তাহাদের। শস্যক্ষেত্র করো
ছারখার। ক্ষুধা-রাক্ষসীর হাতে সঁপি
দাও দেশ, তবে তারে করিবে বাহির।
চন্দ্রসেন। চুপ করো চুপ করো রানী! চলো বৎস,
শিবির ছাড়িয়া চলো কাশ্মীর-প্রাসাদে।
বিক্রমদেব। পরে যাব, অগ্রসর হও মহারাজ।
ওরে হিংস্র নারী! ওরে নরকাগ্নিশিখা!
বন্ধুত্ব আমার সনে! এতদিন পরে
আপনার হৃদয়ের প্রতিমূর্তিখানা
দেখিতে পেলেম ওই রমণীর মুখে।
অমনি শাণিত ক্রুর বক্র জ্বালারেখা
আছে কি ললাটে মোর। রুদ্ধ হিংসাভারে
অধরের দুই প্রান্ত পড়েছে কি নুয়ে।
অমনি কি তীক্ষ্ম মোর উষ্ণ তিক্ত বাণী