![](/themes/rabindra/logo.png)
গণেশ। বুঝেছেন নরোত্তমবাবু, একটা প্রবন্ধ হিন্দুধর্মের-
নরোত্তম। ( নেপথ্যে চাহিয়া) ঐ ঐ, ঐ সর্বনাশ হল! ছেলেটা প'ল বুঝি!
[ প্রস্থান
গণেশ। কাল থেকে চেষ্টা করছি, কাউকে পাচ্ছি নে। কে যেন কাকের বাসায় ঢিল ছুঁড়ছে — বাসাসুদ্ধ প্রাণী চঞ্চল হয়ে বেড়াচ্ছে। পূর্বে যে বাসায় ছিলুম সেখানে একটি লোকও বাকি রইল না, কাজেই ছেড়ে আসতে হল। এখানেই বা এরা দু দণ্ড স্থির হয়ে বসতে পারে না কেন! যাই, নরোত্তমবাবুকে ধরি গে। লোকটি বেশ মোটাসোটা ভালোমানুষ।
নবকান্ত। দেখো নরোত্তম, হৃদয়ের রহস্য-
নরোত্তম। এখন নয় ভাই, আপিস আছে।
নবকান্ত। ( সনিশ্বাসে) আহা, তোমার তো আপিস আছে, আমার কী আছে বলো তো। আমার যে occupation gone! Othello's occupation gone! শেক্স্পিয়ার যে লিখেছে — কোথায় যাও — আঃ, শোনো-না—
নরোত্তম। না ভাই, আমাকে মাপ করো — সাহেব রাগ করবে, আমারও occupation যাবার জো হবে।
নবকান্ত। আমি বলছিলুম উভয় পক্ষের যদি — আহা শোনো-না — উভয় পক্ষের-
নরোত্তম। ও-সব কথা আমার জানা নেই, উভয় পক্ষের কথা শুনলে আমার ভারি গোল বেধে যায়, মাথা ঘুরতে থাকে।
নবকান্ত। তুমি আমার কথা না শুনেই যে ভয় পাচ্ছ, আমি যা বলছি তা তর্কের কথা নয় — হৃদয়ের কথা, সহজ কথা।
নরোত্তম। কিন্তু ঐ সহজ কথাতেই সাড়ে-চারটে বেজে যাবে — আমায় ছাড়ো।
নবকান্ত। আচ্ছা দেখো, দশ মিনিটের বেশি লাগবে না — ঘড়ি ধরে থাকো, আমি বলে যাই।
নরোত্তম। ( সকাতরে) নবকান্ত, কেন তোমরা সকলে আমাকে নিয়েই পড়েছ? ও ঘরে হরি আছে, নবীন আছে, তাদের কাছে তো ঘেঁষ না। সেদিন ঠিক এমনি সময়ে হৃদয়ের রহস্যের কথা পাড়লে, সাড়ে-দুপুর বেজে গেল — সাহেবের কাছে জরিমানা দিতে হল। আবার আজও সেই হৃদয়ের রহস্য! গরিবের চাকরিটি গেলে হৃদয়ের রহস্য আমার কোন্ কাজে লাগবে!
[প্রস্থানোদ্যম
নবকান্ত। ( ধরিয়া) রাগ করলে ভাই!
নরোত্তম। না, রাগের কথা হচ্ছে না। আপিসের বেলা হল, তাই তাড়াতাড়ি করছি।
[প্রস্থানোদ্যম
নবকান্ত। ( ধরিয়া ) না ভাই, তুমি রাগ করছ।
নরোত্তম। এও তো বিষম মুশকিলে ফেললে! কিন্তু শীতকালের দিনে কথায় কথায় বেলা হয়ে যায়।
[ প্রস্থানোদ্যম
নবকান্ত। ( ধরিয়া) না ভাই, তুমি রাগ করে চলে যাচ্ছ, আমার সমস্ত দিন মন খারাপ থাকবে।
নরোত্তম। আচ্ছা ভাই, আপিস থেকে ফিরে এসে কথা হবে।