“বলছে, যদি তাকে বিয়ে করি তাহলে সে আমার জামিন হয়ে আমার দায় গ্রহণ করবে।”
অন্ধকার হয়ে উঠল অতীনের মুখ, জিজ্ঞাসা করলে, “কী জবাব দিলে তুমি?”
এলা বললে, “আমি সেই চিঠির উপর কেবল লিখে দিলুম পিশাচ। আর-কিছু নয়।”
“খবর পেয়েছি, সেই বটুই আসবে কাল পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে। তোমার সম্মতি পেলেই বাঘের সঙ্গে রফা করে তোমাকে কুমিরের গর্তে আশ্রয় দেবার হিতব্রতে সে উঠে পড়ে লাগবে। তার হৃদয় কোমল।”
এলা অতীনের পা জড়িয়ে ধরে বললে, “মারো আমাকে অন্তু, নিজের হাতে। তার চেয়ে সৌভাগ্য আমার কিছু হতে পারে না।” মেঝের থেকে উঠে দাঁড়িয়ে অতীনকে বার বার চুমো খেয়ে খেয়ে বললে, “মারো এইবার মারো।” ছিঁড়ে ফেললে বুকের জামা। অতীন পাথরের মূর্তির মতো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
এলা বললে, “একটুও ভেবো না অন্তু। আমি যে তোমার, সম্পূর্ণই তোমার– মরণেও তোমার। নাও আমাকে। নোংরা হাত লাগতে দিয়ো না আমার গায়ে, আমার এ দেহ তোমার।”
অতীন কঠিন সুরে বললে, “যাও এখনই শুতে যাও, হুকুম করছি শুতে যাও।”
অতীনকে বুকে চেপে ধরে এলা বলতে লাগল।– “অন্তু, অন্তু আমার, আমার রাজা, আমার দেবতা, তোমাকে কত ভালোবেসেছি আজ পর্যন্ত সম্পূর্ণ করে তা জানাতে পারলুম না। সেই ভালোবাসার দোহাই, মারো, আমাকে মারো।”
অতীন এলার হাত জোর করে ধরে তাকে শোবার ঘরে টেনে নিয়ে গেল, বললে, “শোও, এখনই শোও। ঘুমোও।”
“ঘুম হবে না।”
“ঘুমোবার ওষুধ আছে আমার হাতে।”
“কিচ্ছু দরকার নেই অন্তু। আমার চৈতন্যের শেষ মুহূর্ত তুমিই নাও। ক্লোরোফর্ম এনেছ? দাও ওটাকে ফেলে। ভীরু নই আমি; জেগে থেকে যাতে মরি তোমার কোলে তাই করো। শেষ চুম্বন আজ অফুরান হল অন্তু। অন্তু।”
দূরের থেকে হুইস্লের শব্দ এল।