Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
জাতীয় সঙ্গীত, ৪
জাতীয় সঙ্গীত
৪
একি অন্ধকার এ ভারতভূমি!
বুঝি, পিতা, তারে ছেড়ে গেছ তুমি।
প্রতি পলে পলে ডুবে রসাতলে— কে তারে ঊদ্ধার করিবে॥
চারি দিকে চাই, নাহি হেরি গতি । নাহি যে আশ্রয়, অসহায় অতি।
আজি এ আঁধারে বিপদপাথারে কাহার চরণ ধরিবে।
তুমি চাও পিতা, ঘুচাও এ দুখ । অভাগা দেশেরে হোয়ো না বিমুখ—
নহিলে আঁধারে বিপদপাথারে কাহার চরণ ধরিবে।
বুঝি, পিতা, তারে ছেড়ে গেছ তুমি।
প্রতি পলে পলে ডুবে রসাতলে— কে তারে ঊদ্ধার করিবে॥
চারি দিকে চাই, নাহি হেরি গতি । নাহি যে আশ্রয়, অসহায় অতি।
আজি এ আঁধারে বিপদপাথারে কাহার চরণ ধরিবে।
তুমি চাও পিতা, ঘুচাও এ দুখ । অভাগা দেশেরে হোয়ো না বিমুখ—
নহিলে আঁধারে বিপদপাথারে কাহার চরণ ধরিবে।
দেখো চেয়ে তব সহস্র
সন্তান লাজে নতশির, ভয়ে কম্পমান,
কাঁদিছে
সহিছে শত অপমান— লাজ মান আর থাকে না।
হীনতা লয়েছে মাথায়
তুলিয়া, তোমারেও তাই গিয়াছে ভুলিয়া,
দয়ময় ব’লে
আকুলহৃদয়ে তোমারেও তারা ডাকে না।
তুমি চাও পিতা, তুমি চাও চাও
। এ হীনতা-পাপ এ দুঃখ ঘুচাও।
ললাটের
কলঙ্ক মুছাও মুছাও— নহিলে এ দেশ থাকে না।
তুমি যবে ছিলে এ
পুণ্যভবনে কী সৌরভসুধা বহিত পবনে,
কী
আনন্দগান উঠিত গগনে, কী প্রতিভাজ্যোতি ঝলিত।
ভারত-অরণ্যে ঋষিদের গান অনন্তসদনে করিত প্রয়াণ—
তোমারে
চাহিয়া পুণ্যপথ দিয়া সকলে মিলিয়া চলিত।
আজি কী হয়েছে! চাও
পিতা, চাও। এ তাপ এ পাপ এ দুখ ঘুচাও।
মোরা তো রয়েছি তোমারি সন্তান
যদিও হয়েছি পতিত॥