অর্চনা। ওর ছোঁওয়া বাঁচাতে চাও তোমরা, ওরই ভয় তোমাদের ছোঁওয়াকে দেখছ না –দূরে বসে আইডিয়ার ডিমগুলোতে তা দিচ্ছে?
সতীশ। ও হল সাহিত্যরথী, আমরা পায়ে-হাঁটা পেয়াদা, মিলন ঘটবে কী উপায়ে।
শচীন। ঘটকী আছেন স্বয়ং তোমার বোন বাঁশরি। হাইব্রৌ দার্জিলিং আর ফিলিস্টাইন সিলিগুড়ি, এর মধ্যে উনি রেল-লাইন পাতছেন। এখানে ক্ষিতীশের নেমন্তন্ন তাঁরই চক্রান্তে।
সতীশ। তাই নাকি! তা হলে ভগবানের কাছে হতভাগার আত্মার জন্যে শান্তি কামনা করি। আমার বোনকে এখনো চেনেন না।
শৈলবালা। তোমরা যাই বল, আমার কিন্তু ওর উপরে মায়া হয়।
সতীশ। কোন্ গুণে।
শৈল। চেহারাতে। শুনেছি, ছেলেবেলায় মায়ের বঁটির উপর পড়ে গিয়ে কপালে চোট লেগেছিল, তাই ঐ মস্ত কাটা দাগ। শরীরের খুঁত নিয়ে ওকে যখন ঠাট্টা কর, আমার ভালো লাগে না।
শচীন। মিস্ শৈল, বিধাতা তোমাকে নিখুঁত করেছেন তাই এত করুণা। কলির কোপ আছে যার চেহারায়, সে বিধাতার অকৃপার শোধ তুলতে চায় বিশ্বের উপর। তার হাতে কলম যদি সরু করে কাটা থাকে তা হলে শতহস্ত দূরে থাকা শ্রেয়। ইংরেজ কবি পোপের কথা মনে রেখো।
শৈল। আহা, তোমরা বাড়াবাড়ি করছ।
সতীশ। শৈল, তোমার দরদ দেখে নিজেরই কপালে বঁটি মারতে ইচ্ছে করছে। শাস্ত্রে আছে মেয়েদের দয়া আর ভালোবাসা থাকে এক মহলে, ঠাঁইবদল করতে দেরি হয় না।
শচীন। তোমার ভয় নেই সতীশ, মেয়েরা অযোগ্যকেই দয়া করে।
শৈল। আমাকে তাড়াতে চাও এখান থেকে?
শচীন। সতীশ সেই অপেক্ষাই করছে। ও যাবে সঙ্গে সঙ্গে।
শৈল। রাগিয়ো না বলছি, তা হলে তোমার কথাও ফাঁস করে দেব।
শচীন। জেনে নাও, বন্ধুগণ, আমারও ফাঁস করবার যোগ্য খবর আছে।
সতীশ। মিস্ বাণী, দেখছ লোকটার স্পর্ধা? গুজবটাকে ঠেলে আনছে তোমার দিকে। পাশ কাটাতে না পারলে অ্যাক্সিডেন্ট অনিবার্য।
লীলা। মিস্ বাণীকে সাবধান করতে হবে না। ও জানে তাড়া লাগালেই বিপদকে খেদিয়ে আনা হয়। তাই চুপচাপ আছে, কপালে যা থাকে। ঐ-যে কী গানটা ‘বলেছিল ধরা দেব না’।
বীরপুরুষের সয় নি গুমোর, বাধিয়ে দিয়েছে লড়াই।
তার পরে শেষে কী-যে হল কার,