Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
বসন্ত-১০
বসন্ত
শালবীথিকায় ছায়া গেঁথে
তাই পেতেছে ফাঁদ।
তাই পেতেছে ফাঁদ।
বকুল
ও আমার চাঁদের আলো,
আজ ফাগুনের সন্ধ্যাকালে
ধরা দিয়েছ যে আমার
পাতায় পাতায় ডালে ডালে।
যে-গান তোমার সুরের ধারায়
বন্যা জাগায় তারায় তারায়,
মোর আঙিনায় বাজল সে-সুর
আমার প্রাণের তালে তালে।
সব কুঁড়ি মোর ফুটে ওঠে
তোমার হাসির ইশারাতে।
দখিনহাওয়া দিশাহারা
আমার ফুলের গন্ধে মাতে।
শুভ্র, তুমি করলে বিলোল
আমার প্রাণে রঙের হিলোল,
মর্মরিত মর্ম আমার
জড়ায় তোমার হাসির জালে।
রাজা। সব তো বুঝলুম। আকাশ থেকে চাঁদ দেখছি পৃথিবীর হৃদয়কে দোলা লাগিয়েছে। কিন্তু ওঁকে পৃথিবীতে নামিয়ে এনে কষে দোলা না দিতে পারলে তো জবাব দেওয়া হয় না। তার কী করলে।
কবি। তার তো ব্যবস্থা হয়েছে মহারাজ। আমাদের নদীর ঢেউ আছে তো,সে দিকে চেয়ে দেখো না। চাঁদ টলোমলো।
নদী
কে দেবে চাঁদ তোমায় দোলা।
আপন আলোর স্বপন-মাঝে বিভল ভোলা।
কেবল তোমার চোখের চাওয়ায়
দোলা দিলে হাওয়ায় হাওয়ায়,
বনে বনে দোল জাগালো
ওই চাহনি তুফানতোলা।
আজ মানসের সরোবরে
কোন্ মাধুরীর কমলকানন
আপন আলোর স্বপন-মাঝে বিভল ভোলা।
কেবল তোমার চোখের চাওয়ায়
দোলা দিলে হাওয়ায় হাওয়ায়,
বনে বনে দোল জাগালো
ওই চাহনি তুফানতোলা।
আজ মানসের সরোবরে
কোন্ মাধুরীর কমলকানন