Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
মালিনী - চতুর্থ দৃশ্য, ৩৪
মালিনী
হৃদয়ের।— কন্যা, কোথা ছিল এ শরম
এতদিন! বালিকার লজ্জাভয়শোক
দূর করি দীপ্তি পেত অম্লান আলোক
দুঃসহ উজ্জ্বল। কোথা হতে এল আজ
অশ্রুবাষ্পে ছলছল কম্পমান লাজ—
যেন দীপ্ত হোমহুতাশনশিখা ছাড়ি
সদ্য বাহিরিয়া এল স্নিগ্ধসুকুমারী
দ্রুপদদুহিতা।
এতদিন! বালিকার লজ্জাভয়শোক
দূর করি দীপ্তি পেত অম্লান আলোক
দুঃসহ উজ্জ্বল। কোথা হতে এল আজ
অশ্রুবাষ্পে ছলছল কম্পমান লাজ—
যেন দীপ্ত হোমহুতাশনশিখা ছাড়ি
সদ্য বাহিরিয়া এল স্নিগ্ধসুকুমারী
দ্রুপদদুহিতা।
সুপ্রিয়ের প্রতি
উঠ, ছাড়ো পদতল।
বৎস, বক্ষে এসো। সুখ করিছে বিহ্বল
দুর্ভর দুঃখেরই মতো। দাও অবসর,
হেরি প্রাণপ্রতিমার মুখশশধর
বিরলে আনন্দভরে শুধু ক্ষণকাল। [ সুপ্রিয়ের প্রতি
বৎস, বক্ষে এসো। সুখ করিছে বিহ্বল
দুর্ভর দুঃখেরই মতো। দাও অবসর,
হেরি প্রাণপ্রতিমার মুখশশধর
বিরলে আনন্দভরে শুধু ক্ষণকাল। [ সুপ্রিয়ের প্রতি
স্বগত
বহুদিন পরে মোর মালিনীর ভাল
লজ্জার আভায় রাঙা। কপোল উষার
যখনি রাঙিয়া উঠে, বুঝা যায়, তার
তপন উদয় হতে দেরি নাই আর।
এ রাঙা আভাস দেখে আনন্দে আমার
হৃদয় উঠিছে ভরি ; বুঝিলাম মনে
আমাদের কন্যাটুকু বুঝি এতক্ষণে
বিকশি উঠিল—দেবী না রে, দয়া না রে,
ঘরের সে মেয়ে।
লজ্জার আভায় রাঙা। কপোল উষার
যখনি রাঙিয়া উঠে, বুঝা যায়, তার
তপন উদয় হতে দেরি নাই আর।
এ রাঙা আভাস দেখে আনন্দে আমার
হৃদয় উঠিছে ভরি ; বুঝিলাম মনে
আমাদের কন্যাটুকু বুঝি এতক্ষণে
বিকশি উঠিল—দেবী না রে, দয়া না রে,
ঘরের সে মেয়ে।
প্রতিহারীর প্রবেশ
প্রতিহারী। জয় মহারাজ, দ্বারে
উপনীত বন্দী ক্ষেমংকর।
রাজা। আনো তারে।