Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
মালিনী - দ্বিতীয় দৃশ্য, ২০
মালিনী
দাঁড়াইব পার্শ্বে তব।
ক্ষেমংকর। শুন তবে, সখে,
আমি চলিলাম।
সুপ্রিয়। কোথা যাবে?
ক্ষেমংকর। দেশান্তরে।
হেথা কোনো আশা নাই আর। ঘরে পরে
ব্যাপ্ত হয়ে গেছে বহ্নি। বাহির হইতে
রক্তস্রোত মুক্ত করি হবে নিবাইতে।
যাই, সৈন্য আনি।
ব্যাপ্ত হয়ে গেছে বহ্নি। বাহির হইতে
রক্তস্রোত মুক্ত করি হবে নিবাইতে।
যাই, সৈন্য আনি।
সুপ্রিয়। হেথাকার সৈন্যগণ
রয়েছে প্রস্তুত।
ক্ষেমংকর। মিথ্যা আশা। এতক্ষণ
মুগ্ধ পঙ্গপালসম তারাও সকলে
দগ্ধপক্ষ পড়িয়াছে সর্ব দলেবলে
হুতাশনে। জয়ধ্বনি ওই শুনা যায়।
উন্মত্তা নগরী আজি ধর্মের চিতায়
জ্বালায় উৎসবদীপ।
দগ্ধপক্ষ পড়িয়াছে সর্ব দলেবলে
হুতাশনে। জয়ধ্বনি ওই শুনা যায়।
উন্মত্তা নগরী আজি ধর্মের চিতায়
জ্বালায় উৎসবদীপ।
সুপ্রিয়। যদি যাবে ভাই,
প্রবাসে কঠিন পণে, আমি সঙ্গে যাই।
ক্ষেমংকর। তুমি কোথা যাবে বন্ধু? তুমি হেথা থেকো
সদা সাবধানে; সকল সংবাদ রেখো
রাজভবনের। লিখো পত্র। দেখো সখে,
তুমিও ভুলো না শেষে নূতন কুহকে,
ছেড়ো না আমায়। মনে রেখো সর্বক্ষণ
প্রবাসী বন্ধুরে।
রাজভবনের। লিখো পত্র। দেখো সখে,
তুমিও ভুলো না শেষে নূতন কুহকে,
ছেড়ো না আমায়। মনে রেখো সর্বক্ষণ
প্রবাসী বন্ধুরে।
সুপ্রিয়। সখে, কুহক নূতন,
আমি তো নূতন নহি। তুমি পুরাতন
আর আমি পুরাতন।
আর আমি পুরাতন।
ক্ষেমংকর। দাও আলিঙ্গন।
সুপ্রিয়। প্রথম বিচ্ছেদ আজি। ছিনু চিরদিন
এক সাথে। বক্ষে বক্ষে বিরহবিহীন
চলেছিনু দোঁহে—আজ তুমি কোথা যাবে,
চলেছিনু দোঁহে—আজ তুমি কোথা যাবে,