Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
ভগ্নহৃদয় - দ্বিতীয় সর্গ, ২২
ভগ্নহৃদয়
কখন বা শুনে অতি একমনে
বিজয়ের কথাগুলি,
শুনিতে শুনিতে শির নত করি
তুলি কুঁড়ি এক কতখন ধরি
খুলি খুলি দেয় মুদিত পাপড়ি,
ফুটাইয়া তারে তুলি।
কভু বা সহসা উঠিয়া যায়,
কভু বা আবার ফিরিয়া চায়—
মৃদু মৃদু স্বরে গুন্ গুন্ করে
উঠে এক গান গেয়ে!
এমন মধুর অধীরতা তার!
এমন মোহিনী মেয়ে!
বিজয়ের কথাগুলি,
শুনিতে শুনিতে শির নত করি
তুলি কুঁড়ি এক কতখন ধরি
খুলি খুলি দেয় মুদিত পাপড়ি,
ফুটাইয়া তারে তুলি।
কভু বা সহসা উঠিয়া যায়,
কভু বা আবার ফিরিয়া চায়—
মৃদু মৃদু স্বরে গুন্ গুন্ করে
উঠে এক গান গেয়ে!
এমন মধুর অধীরতা তার!
এমন মোহিনী মেয়ে!
বিনো। সখি লো, তা নয়, কতবার আমি
দেখিয়াছি লুকাইয়া
অশোকের সাথে বসি আছে একা
প্রমোদকাননে গিয়া!
জানি আমি তারে হেরিলে সখীর
সুখে নেচে উঠে হিয়া।
অশোকের সাথে বসি আছে একা
প্রমোদকাননে গিয়া!
জানি আমি তারে হেরিলে সখীর
সুখে নেচে উঠে হিয়া।
নলিনী। হেথা আয় তোরা, দে দেখি সাজায়ে
শ্যামা-পাখীটিরে মোর!
দুটি ফুল বসা দুইটি ডানায়,
বেলকুঁড়ি-মালা কেমন মানায়
সুগোল গলায় ওর!
ওই দেখ্ সখি! দেখি নি কখনো
এমন দুরন্ত পাখী!
যতগুলি ফুল দিলেম পরায়ে
সবগুলি দেখ্ ফেলেছে ছড়ায়ে,
শত শত ভাগে ছিঁড়িয়া ছিঁড়িয়া
একটি রাখে নি বাকী!
ভালো, পাখী যদি না চায় সাজিতে
আমারে সাজা লো তবে।
দুটি ফুল বসা দুইটি ডানায়,
বেলকুঁড়ি-মালা কেমন মানায়
সুগোল গলায় ওর!
ওই দেখ্ সখি! দেখি নি কখনো
এমন দুরন্ত পাখী!
যতগুলি ফুল দিলেম পরায়ে
সবগুলি দেখ্ ফেলেছে ছড়ায়ে,
শত শত ভাগে ছিঁড়িয়া ছিঁড়িয়া
একটি রাখে নি বাকী!
ভালো, পাখী যদি না চায় সাজিতে
আমারে সাজা লো তবে।
চারু। তোর সাজ ফুরাইবে কবে?