Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
ভগ্নহৃদয় - দ্বিতীয় সর্গ, ১৮
ভগ্নহৃদয়
তা কি মনে আছে তোর?
অলকা। মরি মরি কিবা সাজাবার ছিরি
চেয়ে দেখ্ একবার!
সখীর অমন ক্ষীণ দেহমাঝে
কমলফুলের মালা কি লো সাজে?
বিনোদিনী দেখ্ গাঁথিছে বসিয়া
কমলের ফুলহার!
সখীর অমন ক্ষীণ দেহমাঝে
কমলফুলের মালা কি লো সাজে?
বিনোদিনী দেখ্ গাঁথিছে বসিয়া
কমলের ফুলহার!
নলিনী। ওই দেখ, সখি, দাঁড়ের উপরে
মাথাটি গুঁজিয়া পাখার ভিতরে
শ্যামাটি আমার— সাধের শ্যামাটি
কেমন ঘুমায়ে আছে!
আন্ সখি ওরে কাছে!
গান গেয়ে গেয়ে, তালি দিয়ে দিয়ে,
ঘিরে বসি ওরে সকলে মিলিয়ে—
দেখিব কেমন ফিরে ফিরে ফিরে
তালে তালে তালে নাচে।
শ্যামাটি আমার— সাধের শ্যামাটি
কেমন ঘুমায়ে আছে!
আন্ সখি ওরে কাছে!
গান গেয়ে গেয়ে, তালি দিয়ে দিয়ে,
ঘিরে বসি ওরে সকলে মিলিয়ে—
দেখিব কেমন ফিরে ফিরে ফিরে
তালে তালে তালে নাচে।
শ্যামার প্রতি গান
নাচ্, শ্যামা, তালে তালে।
বাঁকায়ে গ্রীবাটি তুলি পাখা দুটি
এপাশে ওপাশে করি ছুটাছুটি
নাচ্, শ্যামা, তালে তালে।
রুণু রুণু ঝুনু বাজিছে নূপুর,
মৃদু মৃদু মধু উঠে গীতসুর,
বলোয়ে বলোয়ে বাজে ঝিনি ঝিনি,
তালে তালে উঠে করতালিধ্বনি—
নাচ্, শ্যামা, নাচ্ তবে!
বাঁকায়ে গ্রীবাটি তুলি পাখা দুটি
এপাশে ওপাশে করি ছুটাছুটি
নাচ্, শ্যামা, তালে তালে।
রুণু রুণু ঝুনু বাজিছে নূপুর,
মৃদু মৃদু মধু উঠে গীতসুর,
বলোয়ে বলোয়ে বাজে ঝিনি ঝিনি,
তালে তালে উঠে করতালিধ্বনি—
নাচ্, শ্যামা, নাচ্ তবে!
নিরালয় তোর বনের মাঝে
সেথা কি এমন নূপুর বাজে?
বনে তোর পাখী আছিল যত
গাহিত কি তারা মোদের মত