Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
মালিনী - দ্বিতীয় দৃশ্য, ১৪
মালিনী
উগ্রসেনের প্রবেশ
উগ্রসেন। কার্য সিদ্ধ, ক্ষেমংকর! হয়েছে চঞ্চল
ব্রাহ্মণের বাক্য শুনে রাজসৈন্যদল,
আজি বাঁধ ভাঙে-ভাঙে।
আজি বাঁধ ভাঙে-ভাঙে।
সোমাচার্য। সৈন্যদল!
চারুদত্ত। সে কী!
চারুদত্ত। সে কী!
এ কী কাণ্ড, ক্রমে এ যে বিপরীত দেখি
বিদ্রোহের মতো।
বিদ্রোহের মতো।
সোমাচার্য। এতদূর ভালো নয়,
ক্ষেমংকর।
চারুদত্ত। ধর্মবলে ব্রাহ্মণের জয়,
বাহুবলে নহে। যজ্ঞযাগে সিদ্ধি হবে ;
দ্বিগুণ উৎসাহভরে এসো, বন্ধু, সবে
করি মন্ত্রপাঠ। শুদ্ধাচারে যোগাসনে
ব্রহ্মতেজ করি উপার্জন। একমনে
পূজি ইষ্টদেবে।
দ্বিগুণ উৎসাহভরে এসো, বন্ধু, সবে
করি মন্ত্রপাঠ। শুদ্ধাচারে যোগাসনে
ব্রহ্মতেজ করি উপার্জন। একমনে
পূজি ইষ্টদেবে।
সোমাচার্য। তুমি কোথা আছ দেবী,
সিদ্ধিদাত্রী জগদ্ধাত্রী! তব পদ সেবি
ব্যর্থকাম কভু নাহি হবে ভক্তজন।
তুমি কর নাস্তিকের দর্পসংহরণ
সশরীরে— প্রত্যক্ষ দেখায়ে দাও আজি
বিশ্বাসের বল। সংহারের বেশে সাজি
এখনি দাঁড়াও সর্বসম্মুখেতে আসি
মুক্তকেশে খড়গহস্তে, অট্টহাস হাসি
পাষণ্ডদলনী। এসো সবে একপ্রাণ
ভক্তিভরে সমস্বরে করহ আহ্বান
প্রলয়শক্তিরে।
ব্যর্থকাম কভু নাহি হবে ভক্তজন।
তুমি কর নাস্তিকের দর্পসংহরণ
সশরীরে— প্রত্যক্ষ দেখায়ে দাও আজি
বিশ্বাসের বল। সংহারের বেশে সাজি
এখনি দাঁড়াও সর্বসম্মুখেতে আসি
মুক্তকেশে খড়গহস্তে, অট্টহাস হাসি
পাষণ্ডদলনী। এসো সবে একপ্রাণ
ভক্তিভরে সমস্বরে করহ আহ্বান
প্রলয়শক্তিরে।
সমস্বরে
ব্রাহ্মণগণ। সবে করজোড়ে যাচি—
আয় মা প্রলয়ংকরী।