Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)


রুদ্রচণ্ড - চতুর্থ দৃশ্য, ১৫
রুদ্রচণ্ড
এখনো জীবনে মোর আছে প্রয়োজন!
এখনো— এখনো আছে! এখনো আমার
সঙ্কল্প রয়েছে হ’য়ে দারুণ তৃষিত!
রুদ্রচণ্ড তোর কাছে ভিক্ষা মাগিতেছে
আর কি চাহিস চাঁদ? দিবি মোরে প্রাণ?
অশ্বারোহী দূতের প্রবেশ
চাঁদ কবির প্রতি
দূত।          মহাশয়, আসিতেছি রাজসভা হতে!
নিমেষ ফেলিতে আর নাই অবসর!
প্রতি মুহূর্ত্তের ’পরে অতি ক্ষীণ সূত্রে
রাজত্বের শুভাশুভ করিছে নির্ভর!
প্রশ্নোত্তর করিবার নাইক সময়!
[সত্বর উভয়ের প্রস্থান


চতুর্থ দৃশ্য
রুদ্রচণ্ড
রুদ্রচণ্ড।    অনুগ্রহ ক’রে মোরে চ’লে গেল চাঁদ!
গৃহে ব’সে ভাবিতেছে প্রসন্নবদনে
রুদ্রচণ্ডে বাঁচালেম অনুগ্রহ ক’রে?
অনুগ্রহ! রুদ্রচণ্ডে অনুগ্রহ করা!
এ অনুগ্রহের ছুরি মর্ম্মের মাঝারে
যত দিন বেঁচে রব— রহিবে নিহিত!
দিনরাত্রি রক্ত মোর করিবে শোষণ।
দুগ্ধপোষ্য শিশু চাঁদ— তার অনুগ্রহ!
ভিক্ষা-পাওয়া এ জীবন না রাখিলে নয়!
এ হীন প্রাণের কাজ যখনি ফুরাবে
তখনি ধূলায় এরে করিব নিক্ষেপ,
চরণে দলিয়া এরে চূর্ণ ক’রে দেব’।