স্বামী হতবুদ্ধি হইয়া গেলেন, “গুরুঠাকুর! এমন কথা তিনি কখন বলিলেন।”
আমি বলিলাম, “আজ সকালে যখন স্নান করিয়া ফিরিতেছিলাম তাঁহার সঙ্গে দেখা হইয়াছিল। তখনি বলিলেন।”
স্বামীর কণ্ঠ কাঁপিয়া গেল। জিজ্ঞাসা করিলেন, “এমন আদেশ কেন করিলেন।”
আমি বলিলাম, “জানি না। তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিয়ো, পারেন তো তিনিই বুঝাইয়া দিবেন।”
স্বামী বলিলেন, “সংসারে থাকিয়াও তো সংসার ত্যাগ করা যায়, আমি সেই কথা গুরুকে বুঝাইয়া বলিব।”
আমি বলিলাম, “হয়তো গুরু বুঝিতে পারেন, কিন্তু আমার মন বুঝিবে না। আমার সংসার করা আজ হইতে ঘুচিল।”
স্বামী চুপ করিয়া বসিয়া রহিলেন। আকাশ যখন ফরসা হইল তিনি বলিলেন, “চলো-না, দুজনে একবার তাঁর কাছেই যাই।”
আমি হাত জোড় করিয়া বলিলাম, “তাঁর সঙ্গে আর আমার দেখা হইবে না।”
তিনি আমার মুখের দিকে চাহিলেন,আমি মুখ নামাইলাম। তিনি আর কোনো কথা বলিলেন না।
আমি জানি, আমার মনটা তিনি একরকম করিয়া দেখিয়া লইলেন।
পৃথিবীতে দুটি মানুষ আমাকে সব চেয়ে ভালোবাসিয়াছিল, আমার ছেলে আর আমার স্বামী। সে ভালোবাসা আমার নারায়ণ, তাই সে মিথ্যা সহিতে পারিল না। একটি আমাকে ছাড়িয়া গেল, একটিকে আমি ছাড়িলাম। এখন সত্যকে খুঁজিতেছি, আর ফাঁকি নয়।
এই বলিয়া সে গড় করিয়া প্রণাম করিল।