Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
প্রকৃতির প্রতিশোধ - চতুর্দশ দৃশ্য ৩৬
প্রকৃতির প্রতিশোধ
চতুর্দশ দৃশ্য
প্রভাত
অরণ্য হইতে ছুটিয়া বাহিরে আসিয়া
সন্ন্যাসী। যাক, রসাতলে যাক সন্ন্যাসীর ব্রত!
ছুঁড়িয়া ফেলিয়া
দূর করো, ভেঙে ফেলো দণ্ড কমণ্ডুলু!
আজ হতে আমি আর নহি রে সন্ন্যাসী!
পাষাণসংকল্পভার দিয়ে বিসর্জন
আনন্দে নিশ্বাস ফেলে বাঁচি এক বার।
হে বিশ্ব, হে মহাতরী, চলেছ কোথায়,
আমারে তুলিয়া লও তোমার আশ্রয়ে —
একা আমি সাঁতারিয়া পারিব না যেতে।
কোটি কোটি যাত্রী ওই যেতেছে চলিয়া,
আমিও চলিতে চাই উহাদেরি সাথে।
যে পথে তপন শশী আলো ধরে আছে,
সে পথ করিয়া তুচ্ছ, সে আলো ত্যজিয়া,
আপনারি ক্ষুদ্র এই খদ্যোত-আলোকে
কেন অন্ধকারে মরি পথ খুঁজে খুঁজে!
জগৎ, তোমারে ছেড়ে পারি নে যে যেতে,
মহা আকর্ষণে সবে বাঁধা আছি মোরা।
আজ হতে আমি আর নহি রে সন্ন্যাসী!
পাষাণসংকল্পভার দিয়ে বিসর্জন
আনন্দে নিশ্বাস ফেলে বাঁচি এক বার।
হে বিশ্ব, হে মহাতরী, চলেছ কোথায়,
আমারে তুলিয়া লও তোমার আশ্রয়ে —
একা আমি সাঁতারিয়া পারিব না যেতে।
কোটি কোটি যাত্রী ওই যেতেছে চলিয়া,
আমিও চলিতে চাই উহাদেরি সাথে।
যে পথে তপন শশী আলো ধরে আছে,
সে পথ করিয়া তুচ্ছ, সে আলো ত্যজিয়া,
আপনারি ক্ষুদ্র এই খদ্যোত-আলোকে
কেন অন্ধকারে মরি পথ খুঁজে খুঁজে!
জগৎ, তোমারে ছেড়ে পারি নে যে যেতে,
মহা আকর্ষণে সবে বাঁধা আছি মোরা।
পাখি যবে উড়ে যায় আকাশের পানে
মনে করে, ‘এনু বুঝি পৃথিবী ত্যজিয়া,’
যত ওড়ে — যত ওড়ে— যত ঊর্ধ্বে যায় —
কিছুতে পৃথিবী তবু পারে না ছাড়িতে,
অবশেষে শ্রান্তদেহে নীড়ে ফিরে আসে।
মনে করে, ‘এনু বুঝি পৃথিবী ত্যজিয়া,’
যত ওড়ে — যত ওড়ে— যত ঊর্ধ্বে যায় —
কিছুতে পৃথিবী তবু পারে না ছাড়িতে,
অবশেষে শ্রান্তদেহে নীড়ে ফিরে আসে।
চারিদিকে চাহিয়া
আজি এ জগৎ হেরি কী আনন্দময়!
সবাই আমারে যেন দেখিতে আসিছে।
নদী তরুলতা পাখি হাসিছে প্রভাতে।
উঠিয়াছে লোকজন প্রভাত হেরিয়া,
সবাই আমারে যেন দেখিতে আসিছে।
নদী তরুলতা পাখি হাসিছে প্রভাতে।
উঠিয়াছে লোকজন প্রভাত হেরিয়া,