![](/themes/rabindra/logo.png)
লাগল পালে নেশার হাওয়া,
পাগল পরান চলে গেয়ে।
আমায় ভুলিয়ে দিয়ে যা
তোর দুলিয়ে দিয়ে না,
তোর সুদূর ঘাটে চল্ রে বেয়ে।
চন্দ্রা। তবে তো আশা নেই, আমরা-যে বড়ো কাছে।
বিশু। আমার ভাবনা তো সব মিছে,
তোমার ঘোমটা খুলে দাও,
তোমার নয়ন তুলে চাও,
দাও হাসিতে মোর পরান ছেয়ে।
চন্দ্রা। তোমার স্বপনতরীর নেয়েটি কে সে আমি জানি।
বিশু। বাইরে থেকে কেমন করে জানবে। আমার তরীর মাঝখান থেকে তাকে তো দেখ নি।
চন্দ্রা। তরী ডোবাবে একদিন বলে দিলুম, তোমার সেই সাধের নন্দিনী।
গোকুল। দেখো বিশু, তোমার ঐ নন্দিনীকে ভালো ঠেকছে না।
বিশু। কেন, কী করেছে।
গোকুল। কিছুই করে না, তাই তো খটকা লাগে। এখানকার রাজা খামকা ওকে আনালে কেন। ওর রকমসকম কিছুই বুঝি নে।
চন্দ্রা। বেয়াই, এ আমাদের দুঃখের জায়গা, ও-যে এখানে অষ্টপ্রহর কেবল সুন্দরিপনা করে বেড়ায়, এ আমরা দেখতে পারি নে।
গোকুল। আমরা বিশ্বাস করি সাদা মোটাগোছের চেহারা, বেশ ওজনে ভারী।
বিশু। যক্ষপুরীর হাওয়ায় সুন্দরের ’পরে অবজ্ঞা ঘটিয়ে দেয়, এইটেই সর্বনেশে। নরকেও সুন্দর আছে, কিন্তু সুন্দরকে কেউ সেখানে বুঝতেই পারে না, নরকবাসীর সব চেয়ে বড়ো সাজা তাই।
চন্দ্রা। আচ্ছা বেশ, আমরাই যেন মুর্খু, কিন্তু এখানকার সর্দার পর্যন্ত ওকে দুচক্ষে দেখতে পারে না, তা জান?
বিশু। দেখো দেখো চন্দ্রা, সর্দারের দুচক্ষুর ছোঁয়াচ যেন তোমাকে না লাগে, তা হলে আমাদের দেখেও তোমার চক্ষু লাল হয়ে উঠবে। — আচ্ছা, তুই কী বলিস ফাগুলাল।
ফাগুলাল। সত্যি কথা বলি দাদা, নন্দিনীকে যখন দেখি, নিজের দিকে তাকিয়ে লজ্জা করে। ওর সামনে কথা কইতে পারি নে।