চুমিল হৃদয় ভ’রে।
ললিতা-কপোলে বাহিয়া পড়িল
নয়নের জল দুটি—
নবীন সুখের স্বপন, হায় রে,
মাঝখানে গেল টুটি।
“আয় সখি আয়” কহিল অজিত—
হাত ধরাধরি করি
দুজনে মিলিয়া ঝাঁপায়ে পড়িল
আকুল সাগর-’পরি।
নবরবি সুবিমল কিরণ ঢালিয়া
নিশার আঁধাররাশি ফেলিল ক্ষালিয়া।
ঝটিকার অবসানে প্রকৃতি সহাস,
সংযত করিছে তার এলোথেলো বাস।
খেলায়ে খেলায়ে শ্রান্ত সারাটি যামিনী,
মেঘকোলে ঘুমাইয়া পড়েছে দামিনী।
থেকে থেকে স্বপনেতে চমকিয়া চায়,
ক্ষীণ হাসিখানি হেসে আবার ঘুমায়।
শান্ত লহরীরা এবে শ্রান্ত পদক্ষেপে
তীর-উপলের ‘পরে পড়ে কেঁপে কেঁপে।
দ্বীপের শৈলের শির প্লাবিত করিয়া,
অজস্র কনকধারা পড়িছে ঝরিয়া।
মেঘ, দ্বীপ, জল, শৈল, সব সুরঞ্জিত—
সমস্ত প্রকৃতি গায় স্বর্ণ-ঢালা গীত।
বহু দিন হতে এক ভগ্নতরী জন
করিছে বিজন দ্বীপে জীবনযাপন।
বিজনতাভারে তার অবসন্ন বুক,
কত দিনে দেখে নাই মানুষের মুখ।