Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
শৈশবসঙ্গীত - ভগ্নতরী -৪
শৈশবসঙ্গীত
সহসা উঠিল ঘোর গরজন,
প্রলয়ঝটিকা আসিছে ছুটে।
ছিন্ন মেঘজাল দিগ্বিদিকে ধায়,
ফেনিল তরঙ্গ আকুলি উঠে।
পাগলের মত তরীযাত্রী যত
হেথা হোথা ছুটে তরণী-’পরে—
ছিঁড়িতেছে কেশ,হানিতেছে বুক,
করে হাহাকার কাতর স্বরে!
ছিন্ন-তার বীণা যায় গড়াগড়ি,
অধীরে ভাঙ্গিয়া ফেলেছে বাঁশি—
ঝটিকার স্বর দিতেছে ডুবায়ে
শতেক কণ্ঠের বিলাপরাশি।
তরণীর পাশে নীরব অজিত,
ললিতা অবাক্-হিয়া
মাথাটি রাখিয়া অজিতের কাঁধে
রহিয়াছে দাঁড়াইয়া।
কি ভয় মরণে, এক সাথে যবে
মরিবে দুজনে মিলি?
মুকুতাশয়নে সাগরের তলে
ঘুমাইবে নিরিবিলি!
দুইটি প্রণয়ী বাঁধা গলে গলে
কাছাকাছি পাশাপাশি,
পশিবে না সেথা দ্বেষ কোলাহল,
কুটিল কঠোর হাসি।
ঝটিকার মুখে হীনবল তরী
করিতেছে টলমল্—
উঠিছে, নামিছে আছাড়ি পড়িছে,
ভিতরে পশিছে জল।
বাঁধিল ললিতা অজিতের বাহু
দৃঢ়তর বাহুডোরে,
প্রলয়ঝটিকা আসিছে ছুটে।
ছিন্ন মেঘজাল দিগ্বিদিকে ধায়,
ফেনিল তরঙ্গ আকুলি উঠে।
পাগলের মত তরীযাত্রী যত
হেথা হোথা ছুটে তরণী-’পরে—
ছিঁড়িতেছে কেশ,হানিতেছে বুক,
করে হাহাকার কাতর স্বরে!
ছিন্ন-তার বীণা যায় গড়াগড়ি,
অধীরে ভাঙ্গিয়া ফেলেছে বাঁশি—
ঝটিকার স্বর দিতেছে ডুবায়ে
শতেক কণ্ঠের বিলাপরাশি।
তরণীর পাশে নীরব অজিত,
ললিতা অবাক্-হিয়া
মাথাটি রাখিয়া অজিতের কাঁধে
রহিয়াছে দাঁড়াইয়া।
কি ভয় মরণে, এক সাথে যবে
মরিবে দুজনে মিলি?
মুকুতাশয়নে সাগরের তলে
ঘুমাইবে নিরিবিলি!
দুইটি প্রণয়ী বাঁধা গলে গলে
কাছাকাছি পাশাপাশি,
পশিবে না সেথা দ্বেষ কোলাহল,
কুটিল কঠোর হাসি।
ঝটিকার মুখে হীনবল তরী
করিতেছে টলমল্—
উঠিছে, নামিছে আছাড়ি পড়িছে,
ভিতরে পশিছে জল।
বাঁধিল ললিতা অজিতের বাহু
দৃঢ়তর বাহুডোরে,