Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
শৈশবসঙ্গীত - অপ্সরাপ্রেম -২
শৈশবসঙ্গীত
গণিতেছি বসি এক এক করি—
নাই রাতি নাই দিন।
ওই তৃণগুলি হরিত প্রান্তরে
নোয়াইছে মাথা মৃদুবায়ুভরে,
সারা দিন যায়— সারা রাত যায়—
শূন্য আঁখি মেলি চেয়ে আছি হায়—
নয়ন পলকহীন।
বরষে বাদল, গরজে অশনি,
পলকে পলকে চমকে দামিনী,
পাগলের মত হেথায় হোথায়
আঁধার আকাশে বহিতেছে বায়
অবিশ্রাম সারারাতি।
বহিতেছে বায়ু পাদপের ‘পরে,
বহিছে আঁধার-প্রাসাদ-শিখরে,
ভগ্ন দেবালয়ে বহে হুহু করি,
জাগিয়া উঠিছে তটিনীলহরী
তটিনী উঠিছে মাতি।
কোথায় গো, সখা, কোথা গো!
একাকী হেথায় বাতায়নপাশে
রয়েছি বসিয়া, সখা, তব আশে—
দেহে বল নাই, চোখে ঘুম নাই,
পথপানে চেয়ে রয়েছি সদাই—
কোথায় গো, সখা কোথা গো!
যাহারা যাহারা গিয়েছিল রণে,
সবাই ফিরিয়া এসেছে ভবনে,
প্রিয়-আলিঙ্গনে প্রণয়িনীগণ
কাঁদিয়া হাসিয়া মুছিছে নয়ন
কোন জ্বালা নাহি জানে।
আমিই কেবল একা আছি প’ড়ে
পরিশ্রান্ত অতি— আশা ক’রে ক’রে—
নিরাশ পরাণ আর ত রহে না,
নাই রাতি নাই দিন।
ওই তৃণগুলি হরিত প্রান্তরে
নোয়াইছে মাথা মৃদুবায়ুভরে,
সারা দিন যায়— সারা রাত যায়—
শূন্য আঁখি মেলি চেয়ে আছি হায়—
নয়ন পলকহীন।
বরষে বাদল, গরজে অশনি,
পলকে পলকে চমকে দামিনী,
পাগলের মত হেথায় হোথায়
আঁধার আকাশে বহিতেছে বায়
অবিশ্রাম সারারাতি।
বহিতেছে বায়ু পাদপের ‘পরে,
বহিছে আঁধার-প্রাসাদ-শিখরে,
ভগ্ন দেবালয়ে বহে হুহু করি,
জাগিয়া উঠিছে তটিনীলহরী
তটিনী উঠিছে মাতি।
কোথায় গো, সখা, কোথা গো!
একাকী হেথায় বাতায়নপাশে
রয়েছি বসিয়া, সখা, তব আশে—
দেহে বল নাই, চোখে ঘুম নাই,
পথপানে চেয়ে রয়েছি সদাই—
কোথায় গো, সখা কোথা গো!
যাহারা যাহারা গিয়েছিল রণে,
সবাই ফিরিয়া এসেছে ভবনে,
প্রিয়-আলিঙ্গনে প্রণয়িনীগণ
কাঁদিয়া হাসিয়া মুছিছে নয়ন
কোন জ্বালা নাহি জানে।
আমিই কেবল একা আছি প’ড়ে
পরিশ্রান্ত অতি— আশা ক’রে ক’রে—
নিরাশ পরাণ আর ত রহে না,