Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
শৈশবসঙ্গীত -ফুলবালা -৫
শৈশবসঙ্গীত
হেরিয়া নূতন প্রাণী
চারি ধার ঘিরি রহিল দাঁড়ায়ে
যতেক কুসুমরাণী!
গোলাপ মালতী, শিউলি সেঁউতি,
পারিজাত নরগেশ,
সব ফুলবাস মিলি এক ঠাঁই
ভরিল কাননদেশ।
চুপি চুপি আসি কোন ফুলশিশু
ঘা মারে বীণার ‘পরে,
ঝন্ করি যেই বাজি উঠে তার
চমকি পলায় ডরে।
অমনি হাসিয়া কলপনাসখী
বীণাটি লইয়া করে,
ধীরি ধীরি ধীরি মৃদুল মৃদুল
বাজায় মধুর স্বরে
অবাক্ হইয়া ফুলবালাগণ
মোহিত হইয়া তানে
নীরব হইয়া চাহিয়া রহিল
শোভনার মুখপানে।
ধীরি ধীরি সবে বসিয়া পড়িল
হাতখানি দিয়া গালে,
ফুলে বসি বসি ফুলশিশুগণ
দুলিতেছে তালে তালে।
হেন কালে এক আসিয়া মির
কহিল তাদের কানে,
“এখনো রয়েছে বাকী কত কাজ,
ব’সে আছ এইখানে?
রঙ দিতে হবে কুসুমের দলে,
ফুটাতে হইবে কুঁড়ি—
মধুহীন কত গোলাপকলিকা
রয়েছে কানন জুড়ি!”