Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
শৈশবসঙ্গীত -ফুলবালা -২
শৈশবসঙ্গীত
হাসি কহে বালা, “ফুলের জগতে
যাইবে আজিকে কবি?
দেখিবে কত কি অভূত ঘটনা,
কত কি অভূত ছবি!
চারি দিকে যেথা ফুলে ফুলে আলা
উড়িছে মধুপকুল।
ফুলদলে-দলে ভ্রমি ফুলবালা
ফুঁ দিয়া ফুটায় ফুল।
দেখিবে কেমনে শিশিরসলিলে
মুখ মাজি ফুলবালা
কুসুমরেণুর সিঁদুর পরিয়া
ফুলে ফুলে করে খেলা।
দেহখানি ঢাকি ফুলের বসনে
প্রজাপতি-’পরে চড়ি
কমলকাননে কুসুমকামিনী
ধীরে ধীরে যায় উড়ি।
কমলে বসিয়া মুচুকি হাসিয়া
দুলিছে লহরীভরে,
হাসিমুখখানি দেখিছে নীরবে
সরসী-আরসি-’পরে।
ফুলকোল হ’তে পাপড়ি খসায়ে
সলিলে ভাসায়ে দিয়া
চড়ি সে পাতায় ভেসে ভেসে যায়
মিরে ডাকিয়া নিয়া।
কোলে ক’রে লয়ে মিরে তখন
গাহিবারে কহে গান।
গান গাওয়া হলে হরষে মোহিনী
ফুলমধু করে দান।
দুই চারি বালা হাত ধরি ধরি
কামিনী-পাতায় বসি
চুপি চুপি চুপি ফুলে দেয় দোল,