Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
কর্তার ভূত, ৩
কর্তার ভূত
প্রশ্নকারী বলে, “সে তো বুঝলুম, কিন্তু আধুনিকতম বুলবুলির ঝাঁক আর উপস্থিততম বর্গির দল, এদের কী করা যায়।”
মাসিপিসি বলে, “বুলবুলির ঝাঁককে কৃষ্ণনাম শোনাব, আর বর্গির দলকেও।”
অর্বাচীনেরা উদ্ধত হয়ে বলে ওঠে, “যেমন করে পারি ভূত ছাড়াব।”
ভূতের নায়েব চোখ পাকিয়ে বলে, “চুপ। এখনো ঘানি অচল হয় নি।”
শুনে দেশের খোকা নিস্তব্ধ হয়, তার পরে পাশ ফিরে শোয়।
৬
মোদ্দা কথাটা হচ্ছে, বুড়ো কর্তা বেঁচেও নেই, মরেও নেই, ভূত হয়ে আছে। দেশটাকে সে নাড়েও না, অথচ ছাড়েও না।
দেশের মধ্যে দুটো-একটা মানুষ, যারা দিনের বেলা নায়েবের ভয়ে কথা কয় না, তারা গভীর রাত্রে হাত জোড় করে বলে, “কর্তা, এখনো কি ছাড়বার সময় হয় নি।”
কর্তা বলেন, “ওরে অবোধ, আমার ধরাও নেই, ছাড়াও নেই, তোরা ছাড়লেই আমার ছাড়া।”
তারা বলে, “ভয় করে যে, কর্তা।”
কর্তা বলেন, “সেইখানেই তো ভূত।”