Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
প্রকৃতির প্রতিশোধ -ষোড়শ দৃশ্য, ৩৯
প্রকৃতির প্রতিশোধ
সন্ন্যাসী। কেন এরা সবে মোরে করিছে প্রণাম,
আমি তো সন্ন্যাসী নই। ওঠো ভাই ওঠো —
এস ভাই, আজ মোরা করি কোলাকুলি।
আমিও যে একজন তোমাদেরি মতো,
তোমাদেরি গৃহমাঝে নিয়ে যাও মোরে।
জান কি কোথায় আছে মেয়েটি আমার?
শুধাইতে কেন মোর করিতেছে ভয়!
তার মলান মুখ দেখে কেহ কি তোমরা
ডেকে নিয়ে যাও নাই গৃহে তোমাদের!
সে বালিকা কোথাও কি পায় নি আশ্রয়?
এস ভাই, আজ মোরা করি কোলাকুলি।
আমিও যে একজন তোমাদেরি মতো,
তোমাদেরি গৃহমাঝে নিয়ে যাও মোরে।
জান কি কোথায় আছে মেয়েটি আমার?
শুধাইতে কেন মোর করিতেছে ভয়!
তার মলান মুখ দেখে কেহ কি তোমরা
ডেকে নিয়ে যাও নাই গৃহে তোমাদের!
সে বালিকা কোথাও কি পায় নি আশ্রয়?
ষোড়শ দৃশ্য
গুহামুখ
ধুলায় পতিত বালিকা
সন্ন্যাসীর দ্রুত প্রবেশ
সন্ন্যাসী। নয়ন-আনন্দ মোর, হৃদয়ের ধন,
স্নেহের প্রতিমা ওগো, মা, আমি এসেছি —
ধুলায় পড়িয়া কেন — ওঠ্ মা, ওঠ্ মা—
পাষাণেতে মুখখানি রেখেছিস কেন?
আয় রে বুকের মাঝে — এও তো পাষাণ!
ও মা, এত অভিমান করেছিস কেন!
মুখখানি তুলে দেখ্, দুটো কথা ক!
এ কী, এ যে হিম দেহ! না পড়ে নিশ্বাস —
হৃদয় কেন রে স্তব্ধ, বিবর্ণ মুখানি!
বাছা, বাছা, কোথা গেলি! কী করিলি রে —
হায় হায়, এ কী নিদারুণ প্রতিশোধ!
ধুলায় পড়িয়া কেন — ওঠ্ মা, ওঠ্ মা—
পাষাণেতে মুখখানি রেখেছিস কেন?
আয় রে বুকের মাঝে — এও তো পাষাণ!
ও মা, এত অভিমান করেছিস কেন!
মুখখানি তুলে দেখ্, দুটো কথা ক!
এ কী, এ যে হিম দেহ! না পড়ে নিশ্বাস —
হৃদয় কেন রে স্তব্ধ, বিবর্ণ মুখানি!
বাছা, বাছা, কোথা গেলি! কী করিলি রে —
হায় হায়, এ কী নিদারুণ প্রতিশোধ!