শিশুকাল থেকে চেনাশোনা অনেক কালের তেঁতুল গাছ,
দিক্পালের মতো দাঁড়িয়ে
উত্তরপশ্চিম কোণে,
পরিবারের যেন পুরোনো কালের সেবক,
প্রপিতামহের বয়সী।
এই বাড়ির অনেক জন্মমৃত্যুর পর্বের পর পর্বে
সে দাঁড়িয়ে আছে চুপ করে,
যেন বোবা ইতিহাসের সভাপণ্ডিত।
ওই গাছে ছিল যাদের নিশ্চিত দখল কালে কালে
তাদের কত লোকের নাম
আজ ওর ঝরা পাতার চেয়েও ঝরা,
তাদের কত লোকের স্মৃতি
ওর ছায়ার চেয়েও ছায়া।
একদিন ঘোড়ার আস্তাবল ছিল ওর তলায়
খুরের - খট্খটানিতে - অস্থির
খোলার - চালা - দেওয়া ঘরে।
কবে চলে গেছে সহিসের হাঁক ডাকা।
সেই ঘোড়া - বাহনের যুগ
ইতিবৃত্তের ও পারে।
আজ চুপ হয়েছে হ্রেষাধ্বনি,
রঙ বদল করেছে কালের ছবি।
সর্দার কোচম্যানের সযত্নসজ্জিত দাড়ি,
চাবুক হাতে তার সগর্ব উদ্ধত পদক্ষেপ,
সেদিনকার শৌখিন সমারোহের সঙ্গে
গেছে সাজ - পরিবর্তনের মহানেপথ্যে।
দশটা বেলার প্রভাত - রৌদ্রে
ওই তেঁতুলতলা থেকে এসেছে দিনের পর দিন
অবিচলিত নিয়মে ইস্কুলে যাবার গাড়ি।
বালকের নিরুপায় অনিচ্ছার বোঝাটা
টেনে নিয়ে গেছে রাস্তার ভিড়ের মাঝখান দিয়ে।