কোন্-সে কালের কন্ঠ হতে এসেছে এই স্বর —
‘ এপার গঙ্গা ওপার গঙ্গা ', মধ্যিখানে চর। '
অনেক বাণীর বদল হল, অনেক বাণী চুপ,
নতুন কালের নটরাজা নিল নতুন রূপ।
তখন যে-সব ছেলেমেয়ে শুনেছে এই ছড়া
তারা ছিল আর-এক ছাঁদে-গড়া।
প্রদীপ তারা ভাসিয়ে দিত পূজা আনত তীরে,
কী জানি কোন্ চোখে দেখত মকরবাহিনীরে।
তখন ছিল নিত্য অনিশ্চয়,
ইহকালের পরকালের হাজার-রকম ভয়।
জাগত রাজার দারুণ খেয়াল, বর্গি নামত দেশে,
ভাগ্যে লাগত ভূমিকম্প হঠাৎ এক নিমেষে।
ঘরের থেকে খিড়কিঘাটে চলতে হত ডর,
লুকিয়ে কোথায় রাজদস্যুর চর।
আঙিনাতে শুনত পালাগান,
বিনা দোষে দেবীর কোপে সাধুর অসম্মান।
সামান্য ছুতায়
ঘরের বিবাদ গ্রামের শত্রুতায়
গুপ্ত চালের লড়াই যেত লেগে,
শক্তিমানের উঠত গুমর জেগে।
হারত যে তার ঘুচত পাড়ায় বাস,
ভিটেয় চলত চাষ।
ধর্ম ছাড়া কারো নামে পাড়বে যে দোহাই
ছিল না সেই ঠাঁই।
ফিস্ফিসিয়ে কথা কওয়া, সংকোচে মন ঘেরা,
গৃহস্থবউ, জিব কেটে তার হঠাৎ পিছন-ফেরা —
আলতা পায়ে, কাজল চোখে, কপালে তার টিপ,
ঘরের কোণে জ্বালে মাটির দীপ।
মিনতি তার জলে স্থলে, দোহাই-পাড়া মন,