Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
সেঁজুতি - পলায়নী,১
পলায়নী
যে পলায়নের অসীম তরণী
বাহিছে সূর্যতারা
সেই পলায়নে দিবসরজনী
ছুটেছ গঙ্গাধারা।
চিরধাবমান নিখিলবিশ্ব
এ পলায়নের বিপুল দৃশ্য,
এই পলায়নে ভূত ভবিষ্য
দীক্ষিছে ধরণীরে।
জলের ছায়া সে দ্রুততালে বয়,
কঠিন ছায়া সে ওই লোকালয়,
একই প্রলয়ের বিভিন্ন লয়
স্থিরে আর অস্থিরে।
সৃষ্টি যখন আছিল নবীন
নবীনতা নিয়ে এলে,
ছেলেমানুষির স্রোতে নিশিদিন
চল অকারণ খেলে।
লীলাছলে তুমি চিরপথহারা,
বন্ধনহীন নৃত্যের ধারা,
তোমার কুলেতে সীমা দিয়ে কারা
বাঁধন গড়িছে মিছে।
আবাঁধা ছন্দে হেসে যাও সরি
পাথরের মুঠি শিথিলিত করি,
বাঁধাছন্দের নগরনগরী
ধুলায় মিলায় পিছে।
অচঞ্চলের অমৃত বরিষে
চঞ্চলতার নাচে,
বিশ্বলীলা তো দেখি কেবলই সে
নেই নেই ক'রে আছে।