আমার মনে একটুও নেই বৈকুন্ঠের আশা। —
ওইখানে মোর বাসা
যে মাটিতে শিউরে ওঠে ঘাস,
যার 'পরে ওই মন্ত্র পড়ে দক্ষিনে বাতাস।
চিরদিনের আলোক-জ্বালা নীল আকাশের নীচে
যাত্রা আমার নৃত্যপাগল নটরাজের পিছে।
ফুল ফোটাবার যে রাগিণী বকুল শাখায় সাধা,
নিষ্কারণে ওড়ার আবেগ চিলের পাখায় বাঁধা,
সেই দিয়েছে রক্তে আমার ঢেউয়ের দোলাদুলি ;
স্বপ্নলোকে সেই উড়েছে সুরের পাখনা তুলি।
দায়-ভোলা মোর মন
মন্দে-ভালোয় সাদায়-কালোয় অঙ্কিত প্রাঙ্গণ
ছাড়িয়ে গেছে দূর দিগন্ত-পানে
আপন বাঁশির পথ-ভোলানো তানে।
দেখা দিল দেহের অতীত কোন্ দেহ এই মোর
ছিন্ন করি বস্তুবাঁধন-ডোর।
শুধু কেবল বিপুল অনুভূতি,
গভীর হতে বিচ্ছুরিত আনন্দময় দ্যুতি,
শুধু কেবল গানেই ভাষা যার,
পুষ্পিত ফাল্গুনের ছন্দে গন্ধে একাকার ;
নিমেষহারা চেয়ে-থাকার দূর অপারের মাঝে
ইঙ্গিত যার বাজে।
যে দেহেতে মিলিয়ে আছে অনেক ভোরের আলো,
নাম-না-জানা অপূর্বেরে যার লেগেছে ভালো,
যে দেহেতে রূপ নিয়েছে অনির্বচনীয়
সকল প্রিয়ের মাঝখানে যে প্রিয়,
পেরিয়ে মরণ সে মোর সঙ্গে যাবে —
কেবল রসে, কেবল সুরে , কেবল অনুভাবে।