Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
গীতিমাল্য- ৩, ১
৩
ওগো
শেফালি-বনের মনের কামনা।
কেন সুদূর গগনে গগনে
আছ মিলায়ে পবনে পবনে।
কেন কিরণে কিরণে ঝলিয়া
যাও শিশিরে শিশিরে গলিয়া।
কেন চপল আলোতে ছায়াতে
আছ লুকায়ে আপন মায়াতে।
তুমি মুরতি ধরিয়া চকিতে নামো-না।
ওগো শেফালি-বনের মনের কামনা।
তৃণ উঠুক শিহরি শিহরি,
নামো তালপল্লব-বীজনে
নামো জলে ছায়াছবি-সৃজনে;
এসো সৌরভ ভরি আঁচলে,
আঁখি আঁকিয়া সুনীল কাজলে।
মম চোখের সমুখে ক্ষণেক থামো-না।
ওগো শেফালি-বনের মনের কামনা।
আজি নিখিলের সম্ভাষণে;
কেন সুদূর গগনে গগনে
আছ মিলায়ে পবনে পবনে।
কেন কিরণে কিরণে ঝলিয়া
যাও শিশিরে শিশিরে গলিয়া।
কেন চপল আলোতে ছায়াতে
আছ লুকায়ে আপন মায়াতে।
তুমি মুরতি ধরিয়া চকিতে নামো-না।
ওগো শেফালি-বনের মনের কামনা।
আজি মাঠে মাঠে চলো বিহরি,
তৃণ উঠুক শিহরি শিহরি,
নামো তালপল্লব-বীজনে
নামো জলে ছায়াছবি-সৃজনে;
এসো সৌরভ ভরি আঁচলে,
আঁখি আঁকিয়া সুনীল কাজলে।
মম চোখের সমুখে ক্ষণেক থামো-না।
ওগো শেফালি-বনের মনের কামনা।
ওগো সোনার
স্বপন, সাধের সাধনা।
কত আকুল
হাসি ও রোদনে
রাতে দিবসে স্বপনে
বোধনে,
জ্বালি’ জোনাকি-প্রদীপ-মালিকা,
ভরি’
নিশীথ-তিমির-থালিকা,
প্রাতে কুসুমের সাজি সাজায়ে,
সাঁঝে ঝিল্লি-ঝাঁজর
বাজায়ে,
কত করেছে
তোমার স্তুতি-আরাধনা।
ওগো সোনার স্বপন,
সাধের সাধনা।
ওই বসেছ শুভ্র আসনে
আজি নিখিলের সম্ভাষণে;