আমি বললেম, “ নিশ্চয় লিখবই,
আরম্ভ তার হয়েই গেছে সত্য করেই কই।
বাঁকিয়ো না গো পুষ্পধনুক-ভুরু,
শোনো তবে, এইমত তার শুরু। —
‘ শুক্ল একাদশীর রাতে
কলিকাতার ছাতে
জ্যোৎস্না যেন পারিজাতের পাপড়ি দিয়ে ছোঁওয়া,
গলায় আমার কুন্দমালা গোলাপজলে ধোওয়া ' —
এইটুকু যেই লিখেছি সেই হঠাৎ মনে প ' ল,
এটা নেহাত অসাময়িক হল।
হাল ফ্যাশানের বাণীর সঙ্গে নতুন হল রফা,
একাদশীর চন্দ্র দেবেন কর্মেতে ইস্তফা।
শূন্যসভায় যত খুশি করুন বাবুয়ানা ,
সত্য হতে চান যদি তো বাহার-দেওয়া মানা।
তা ছাড়া ওই পারিজাতের ন্যাকামিও ত্যাজ্য,
মধুর করে বানিয়ে বলা নয় কিছুতেই ন্যায্য।
বদল করে হল শেষে নিম্নরকম ভাষা —
‘ আকাশ সেদিন ধুলোয় ধোঁয়ায় নিরেট করে ঠাসা,
রাতটা যেন কুলিমাগি কয়লাখনি থেকে
এল কালো রঙের উপর কালির প্রলেপ মেখে। '
তার পরেকার বর্ণনা এই — ‘ তামাক-সাজার ধন্দে
জগার থ্যাবড়া আঙুলগুলো দোক্তাপাতার গন্ধে
দিনরাত্রি ল্যাপা।
তাই সে জগা খ্যাপা
যে মালাটাই গাঁথে তাতে ছাপিয়ে ফুলের বাস
তামাকেরই গন্ধের হয় উৎকট প্রকাশ। '
নাতনি বললে বাধা দিয়ে, “ আমি জানি জানি,
কী বলে যে শেষ করেছ নিলেম অনুমানি।
যে তামাকের গন্ধ ছাড়ে মালার মধ্যে, ওটায়
সর্বসাধারণের গন্ধ নাড়ীর ভিতর ছোটায়।
বিশ্বপ্রেমিক তাই তোমার এই তত্ত্ব —
ফুলের গন্ধ আলংকারিক, এ গন্ধটাই সত্য। ”