Published on রবীন্দ্র রচনাবলী (https://rabindra-rachanabali.nltr.org)
রোগশয্যায় - ১২
১২
সকাল বেলায় উঠেই দেখি চেয়ে,
যাহা তাহা রয়েছে ঘর ছেয়ে —
খাতাপত্র কোথায় রাখি কী যে,
হাতড়ে বেড়াই, খুঁজে না পাই নিজে।
দামী যত কোথায় কী হয় জমা —
ছড়াছড়ি, নাই কোনো তার সেমিকোলন কমা।
পড়ে আছে পত্রবিহীন লেফাফা সব ছিন্ন —
এই তো দেখি পুরুষ জাতের জাত-কুঁড়েমির চিহ্ন।
পরক্ষণেই নামে কাজে মেয়ের হস্ত দুটি,
মুহূর্তেকেই বিলুপ্ত হয় যেথায় যত ত্রুটি।
দ্রুত হস্তে নিলজ্জ সব বিশৃঙ্খলার প্রতি
নিয়ে আসে শোভনা তার চরম সদগতি।
ছেঁড়ার ক্ষত আরোগ্য হয়, দাগীর লজ্জা ঢাকে,
অদরকারীর গোপন বাসা কোথাও নাহি থাকে।
অগোছালোর মধ্যে থাকি ভাবি অবাক-পারা —
সৃষ্টিতে এই পুরুষ মেয়ের চলেছে দুই ধারা ;
পুরুষ আপন চারি দিকে জমায় আবর্জনা,
মেয়ে এসে নিত্য তারে করিছে মার্জনা।