ফেলে রেখে আয় হাসিক্রন্দন,
ছিঁড়ে আয় যত মিছে বন্ধন,
হেথা ছায়া আছে চিরনন্দন
চিরবসন্ত বায়।
সেই ভালো মা গো, যাক যাহা যায়,
জন্মের মতো বরিনু তোমায়,
কমলগন্ধ কোমল দু-পায়
বার বার নমোনম। '
এত বলি কবি থামাইল গান,
বসিয়া রহিল মুগ্ধনয়ান,
বাজিতে লাগিল হৃদয় পরান
বীণাঝংকার-সম।
পুলকিত রাজা, আঁখি ছলছল্,
আসন ছাড়িয়া নামিলা ভূতল—
দু বাহু বাড়ায়ে, পরান উতল,
কবিরে লইলা বুকে।
কহিলা, ‘ ধন্য, কবি গো, ধন্য,
আনন্দে মন সমাচ্ছন্ন,
তোমারে কী আমি কহিব অন্য—
চিরদিন থাকো সুখে।
ভাবিয়া না পাই কী দিব তোমারে,
করি পরিতোষ কোন্ উপহারে,
যাহা-কিছু আছে রাজভাণ্ডারে
সব দিতে পারি আনি। '
প্রেমোচ্ছ্বসিত আনন্দ-জলে
ভরি দু নয়ন কবি তাঁরে বলে,
‘ কণ্ঠ হইতে দেহো মোর গলে
ওই ফুলমালাখানি। '
মালা বাঁধি কেশে কবি যায় পথে ;
কেহ শিবিকায়, কেহ ধায় রথে,
নানা দিকে লোক যায় নানা মতে