ওরে মৃত্যু, জানি তুই আমার বক্ষের মাঝে
বেঁধেছিস বাসা।
যেখানে নির্জন কুঞ্জে ফুটে আছে যত মোর
স্নেহ-ভালোবাসা,
গোপন মনের আশা, জীবনের দুঃখ সুখ ,
মর্মের বেদনা,
চির-দিবসের যত হাসি-অশ্রু-চিহ্ন-আঁকা
বাসনা-সাধনা ;
যেখানে নন্দন-ছায়ে নিঃশঙ্কে করিছে খেলা
অন্তরের ধন,
স্নেহের পুত্তলিগুলি, আজন্মের স্নেহস্মৃতি,
আনন্দ-কিরণ ;
কত আলো, কত ছায়া, কত ক্ষুদ্র বিহঙ্গের
গীতিময়ী ভাষা —
ওরে মৃত্যু, জানিয়াছি, তারি মাঝখানে এসে
বেঁধেছিস বাসা!
নিশিদিন নিরন্তর জগৎ জুড়িয়া খেলা,
জীবন চঞ্চল।
চেয়ে দেখি রাজপথে চলেছে অশ্রান্তগতি
যত পান্থদল ;
রৌদ্রপাণ্ডু নীলাম্বরে পাখিগুলি উড়ে যায়
প্রাণপূর্ণ বেগে,
সমীরকম্পিত বনে নিশিশেষে নব নব
পুষ্প উঠে জেগে ;
চারি দিকে কতশত দেখাশোনা আনাগোনা
প্রভাতে সন্ধ্যায় ;
দিনগুলি প্রতি প্রাতে খুলিতেছে জীবনের
নূতন অধ্যায় ;
তুমি শুধু এক প্রান্তে বসে আছ অহর্নিশি